এর মধ্যে একজনকে গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে ও আরেকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুল মোস্তফা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতাররা হলেন, শাহ মীরপুর গ্রামের আহমদ মিয়ার ছেলে মো. সুমন ওরফে আবু (২৩) এবং পটিয়া উপজেলার শিকলবাহা গ্রামের দুলা মিয়ার ছেলে মো. ইসমাঈল ফারুকী (২৫)। আবু রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বাংলানিউজকে ওসি সৈয়দুল মোস্তফা বলেন, মামলার পর থেকেই কর্ণফুলী ছাড়াও আনোয়ারায় অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) এ ঘটনায় শাহমীরপুর থেকে আবু ও আনোয়ারা থেকে ফারুকী নামে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে আবুকে বিকেলে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ পারভেজ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামি আবুকে টেস্ট আইডেন্টিফিকেশন প্যারেড (শনাক্তকরণ) করানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ওসি।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নের শাহ মীরপুর এলাকায় ১২ ডিসেম্বর এক বাড়িতে ডাকাতি করে একদল ডাকাত। তখন ওই বাড়িতে চার নারীকে ধর্ষণ করে ডাকাতদলের সদস্যরা।
এ ঘটনায় সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) কর্ণফুলী থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করা হয়। মূলত এরপরই বিষয়টি জানাজানি হয়।
ওসি সৈয়দুল মোস্তফা বলেন, মামলার পর থেকেই জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু হয়। দোষীদের ধরতে অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে।
বড় উঠান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম দিদার বাংলানিউজ বলেন, ওই বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য ছিলেন না। তিন প্রবাসী ভাইয়ের তিন স্ত্রী, দুই সন্তান ও তাদের বৃদ্ধা মা থাকতেন। আরেক নারী তাদের ননদ বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন।
‘গত ১২ ডিসেম্বর রাত ১টার দিকে চারজন যুবক জানালার গ্রিল কেটে বাড়িতে প্রবেশ করে বৃদ্ধা মা ও দুই শিশুকে ছুরি ও অস্ত্র ধরে জিম্মি করে চার নারীকে বিভিন্ন রুমে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় তারা নগদ ৮৫ হাজার টাকা ও ১৫ ভরি স্বণালঙ্কারও নিয়ে যায়। ’
ঘটনার পরপর ভুক্তভোগী পরিবার মামলা করতে গেলেও তাদের হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মোবাইল ফোনে দিদারুল ইসলাম বলেন, কর্ণফুলী থানায় মামলা করতে গেলে তাদের পটিয়া থানায় পাঠানো হয়। আর পটিয়া থানা থেকে জানানো হয় গ্রামটি কর্ণফুলী থানায় পড়েছে। পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা মামলা করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।
‘এক পর্যায়ে তাদের ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের কাছে নিয়ে যাই। তার নির্দেশে কর্ণফুলী থানা মামলা নেয়। ’
তিনি জানান, তার বড় উঠান ইউনিয়নের পাঁচটি ওয়ার্ড পটিয়া আর চারটি ওয়ার্ড কর্ণফুলীতে পড়েছে।
এ বিষয়ে ওসি সৈয়দুল মোস্তফা বলেন, ভুক্তভোগীরা আনোয়ারা থেকে কয়েক মাস আগে বাড়ি তৈরি করে শাহ মীরপুর এসেছেন। অভিযোগ করতে এসে তারা বড় উঠান থেকে এসেছিলেন বলে জানান। সেজন্য তাদের পটিয়া থানায় মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
‘পটিয়া থানায় গিয়ে আবার বলেন তারা শাহ মীরপুর থেকে এসেছেন। তখন ওই থানার কর্মকর্তারা তাদের আমাদের কাছে পাঠান এবং মামলা নেই। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৭/আপডেট ০৬১১ঘণ্টা
এমএ/