রোববার (২৩ ডিসেম্বর) বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, জনগণই নৌকাকে জেতাবে।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির প্রার্থী (আবদুল্লাহ আল নোমান) অভিজ্ঞ এবং প্রবীণ রাজনীতিক, তবে শক্তির মাপকাঠি একবার ২০০৮ সালে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি পরাজিত হয়েছিলেন। তখন মাঝখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল, লাঙল প্রতীকের প্রার্থী ছিল। এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই, লাঙলও নেই। এর বাইরে ১০ বছরে শেখ হাসিনার উন্নয়ন কার্যক্রম তো আছে। আমি ১০ বছর একনাগাড়ে সংসদ সদস্য হিসেবে কাজ করছি। এলাকাবাসীর সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম।
সরকারের নানা উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে কেউ বলতে পারবে না বিদ্যুৎ সংকট আছে। লোডশেডিং হচ্ছে কেউ অভিযোগ করতে পারবে না। শীতকালে কিছু এলাকায় যে গ্যাস সংকট আছে তা মহেশখালীর এলএনজি ভাসমান টার্মিনাল পুরোদমে চালু হলে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে সংকট থাকবে না।
তিনি বলেন, আউটার রিং রোড হয়েছে, ফ্লাইওভার হয়েছে-হচ্ছে, কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল হচ্ছে, সমুদ্রজয়ের ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়নের জন্য একাডেমিক সাইট রেডি করতে বাকলিয়ায় মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি হয়েছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। আগে চট্টগ্রাম বন্দর ছিল সোয়া এক বা দেড় কিলোমিটার। তখন মানুষ বলতো, চাটগাঁর মানুষ সবাই ধনী। সারা দেশের মানুষ জানত খাতুনগঞ্জ-বকশির হাটে আছেন তারা। এখন বে-টার্মিনাল হচ্ছে ১০-১২ কিলোমিটার। মিরসরাই, আনোয়ারাসহ অনেক স্পেশাল ইকোনমিক জোন হচ্ছে। লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
তিনি বলেন, বিমানবন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ফ্লাইওভার হয়ে গেলে চট্টগ্রামের মানুষ যানজট থেকে চিরতরে মুক্তি পাবে। ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। পাঁচ তারকা হোটেল হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম ওয়াসাসহ সব সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করায় একে একে সব সমস্যার সমাধান হচ্ছে।
শেখ হাসিনা জলাবদ্ধতা চিরতরে দূর করতে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে জলাবদ্ধতা নিরসনে ৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কাজ করছে সেনাবাহিনী। উত্তর আগ্রাবাদ, শুলকবহর এলাকার মানুষ কষ্ট পেয়েছে। মুরাদপুর নিয়ে একটি স্লোগান ছিল-‘পানির নিচে মুরাদপুর-কখন হবে সিঙ্গাপুর। ’ তবে আমি বলবো, মুরাদপুর সিঙ্গাপুর হবে না তবে সিঙ্গাপুরের মতো পানি আর দেখা যাবে না।
তিনি বলেন, পাকিস্তানিরা কায়েদে আজম সড়ক করেছিল, স্বাধীনের পর বাঙালিরা জাতির জনক শেখ মুজিব সড়ক করেছি। পঁচাত্তরের পর থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম নেওয়া কঠিন ছিল। কিন্তু চট্টগ্রাম ছিল ব্যতিক্রম। চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। গত ১০ বছরে চট্টগ্রামের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল হয়েছে, জামালখানে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল হয়েছে, বঙ্গবন্ধু হল হয়েছে, অক্সিজেন-কুয়াইশ বঙ্গবন্ধু অ্যাভেনিউ হয়েছে। মীর কাসিম আলী, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ডালিম হোটেল, গুডস হিলে মুক্তিযোদ্ধাদের অকথ্য নির্যাতন করেছিল। তাদের ফাঁসির মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। চট্টগ্রামের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ। আমাদের তরুণ প্রজন্মও যুদ্ধাপরাধী ও তাদের বন্ধুদের ভোট দেবে না।
তিনি বলেন, খুলশী, দক্ষিণ কাট্টলী, নাথপাড়া বধ্যভূমি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। শুলকবহর এলাকায় একটি বধ্যভূমি আছে। সেটিও সংরক্ষণ করা হবে।
উন্নয়নের ধারাবাহিকতার জন্য ভোটারদের শেখ হাসিনার প্রতীক নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান ডা. আফছারুল আমীন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৮
এআর/টিসি