ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ইডিইউর কর্মশালায় বক্তারা

যৌন হয়রানি বাংলাদেশে নারী অগ্রগতির অন্তরায়

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৮ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২১
যৌন হয়রানি বাংলাদেশে নারী অগ্রগতির অন্তরায় ...

চট্টগ্রাম: ক্যাম্পাসে নিয়মিত ঘটে যাওয়া যৌন হয়রানি ও সহিংসতা সম্পর্কে বিস্তৃত ধারণা দেওয়া এবং অংশগ্রহণকারীদের এ বিষয়ে সচেতন করে তোলার মাধ্যমে তা সমাধানের লক্ষ্যে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি আয়োজন করেছে ভার্চুয়াল কর্মশালা।  

সম্প্রতি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

‘স্টেপ আপ, স্পিক আউট: এ কম্প্রিহেন্সিভ আন্ডারস্ট্যান্ডিং ফর অ্যাওয়ার্নেস অ্যান্ড প্রিভেনশন অব ক্যাম্পাস সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স’ শীর্ষক এ অনলাইন সেশনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কানাডার কনকর্ডিয়া ইউনিভার্সিটিতে সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল এনালাইসিসের ডক্টরাল রিসার্চ ফেলো এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওম্যান অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের সহকারী অধ্যাপক আবু সালেহ মোহাম্মদ সোয়াদ।

তিনি বলেন, সুশিক্ষার সাথে লেখাপড়ার সুষ্ঠু ও নির্মল পরিবেশের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়।

কিন্তু বাংলাদেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নারীদের বিকাশের জন্য উপযুক্ত পরিবেশের অভাব রয়েছে। যৌন হয়রানি, সন্ত্রাস ও সহিংসতা বাংলাদেশের নারী অগ্রগতির অন্যতম অন্তরায়। কিন্তু দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোল অর্জনে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত অত্যন্ত জরুরি। ইডিইউর মতো কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছে এবং ক্যাম্পাসে নারী-পুরুষ সমতা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট রয়েছে। কিন্তু দেশের সামগ্রিক চিত্র এখনো খুব বেশি আশাব্যাঞ্জক নয়। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে সকলকেই ভূমিকা রাখতে হবে।

এ সময় তিনি আলোচনা করেন যৌন সহিংসতা কি, এর নানা ধরন, যৌনতা নিয়ে সমাজে বিদ্যমান ভুল ধারনা, মিথ-ট্যাবু এবং তা থেকে উত্তরণের উপায় বিষয়ে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইডিইউ উপাচার্য অধ্যাপক মু. সিকান্দার খান বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ দিন দিন বাড়ছে। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুসারে, বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ৭০ শতাংশেরও বেশি নারী শারীরিক বা মানসিকভাবে যৌন সহিংসতায় আক্রান্ত হচ্ছে। এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নারীর পরবর্তী জীবনকে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। পোস্ট ট্রমাটিক ডিজঅর্ডার, ড্রিপেশন, অ্যাংজাইটি, হতাশাসহ নানারকম মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে তারা। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সমাজের সকল পর্যায়ে জনসচেতনতা তৈরি করা প্রয়োজন।

ইডিইউ যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক ও অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অনন্যা নন্দীর সভাপতিত্বে মডারেটর ছিলেন ইডিইউর স্কুল অব বিজনেসের সহকারী অধ্যাপক তাবাসসুম চৌধুরী। এছাড়া যোগ দেন ইডিইউর সকল শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা।

এ কর্মশালায় দ্বিতীয় পর্ব ছিলো প্রশ্ন-উত্তরের। শিক্ষার্থীরা নানান বিষয়ে প্রশ্ন করেন এবং অতিথিরা এসব প্রশ্নের উত্তর দেন।

উল্লেখ, ইডিইউ যৌন সহিংসতা প্রতিরোধ কমিটি প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই এ স্পর্শকাতর বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে চলেছে। নিয়মিত কর্মশালা, সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে সকলের মাঝে সচেতনতা তৈরি করাসহ নানা রকম উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এছাড়া, বর্তমান সময়ে যৌন সহিংসতার সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এ মাধ্যমে কিভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে, কি করা যাবে বা যাবে না, এসব বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করার লক্ষ্যে গঠন করা হয় ইডিইউ সোশ্যাল মিডিয়া প্রক্টর। অনলাইনে যৌন হয়রানি রোধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় শিক্ষার্থীদের  কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৭ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২১
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।