ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামেও ২ জনের শরীরে মিলেছে করোনার ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০১ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২১
চট্টগ্রামেও ২ জনের শরীরে মিলেছে করোনার ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট  করোনাভাইরাস।

চট্টগ্রাম: ঢাকার পর চট্টগ্রামেও দুইজনের শরীরে করোনাভাইরাসের ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট (ভারতীয় ধরন) শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।

সোমবার (১৪ জুন) বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন গবেষকরা।

গবেষক দলের প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের ফাংশনাল জিনোমিক অ্যান্ড প্রোটিওমিক্স ল্যাবরেটরির অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল-ফোরকান বলেন, ‘চট্টগ্রামের সাতটি করোনা পরীক্ষাগারে ৪২টি নমুনা সংগ্রহ করে তার ভ্যারিয়েন্ট বিশ্লেষণ করা হয়। এতে ২টি ভারতীয় (ডেলটা), ৩টি নাইজেরিয়া (ইটা), ৪টি যুক্তরাজ্যের (আলফা) এবং ৩৩টি দক্ষিণ আফ্রিকার (বিটা) ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে।

গত মে মাসের শেষের দিকে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ধারণা করছি, চট্টগ্রামে ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের কমিউনিটি সংক্রমণ প্রাথমিকভাবে শুরু হয়েছে’।

ড. ফোরকান বলেন, ডেলটা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত দুইজন রোগীর কেউই সম্প্রতি ভারতে যাননি এবং তারা ভারত ফেরত কারো সংস্পর্শেও আসেননি। ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়া দুইজনের মধ্যে একজন ফটিকছড়ি উপজেলার এবং অন্যজন চট্টগ্রাম নগরের বাসিন্দা। ফটিকছড়ি এলাকার রোগীকে খুঁজে পাওয়া গেলেও অন্যজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
 
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ এবং আইসিডিডিআরবি যৌথভাবে এই গবেষণা পরিচালনা করেন।

গবেষক দলের আরেক সদস্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুযত পাল বলেন, ডিএনএ সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের প্রকরণ বিশ্লেষণের কাজটি কারিগরিভাবে বেশ চ্যালেঞ্জিং এবং ব্যয়বহুল। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ এবং আইসিডিডিআরবির গবেষকদলের প্রচেষ্টায় এই গবেষণাটি করা সম্ভব হয়েছে। গবেষণার ফলে বর্তমানে চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের কোন প্রকরণের আধিক্য রয়েছে তা জানা যাবে, যা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সহায়তা করতে পারে।

গবেষণা সহযোগী জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. লায়লা খালেদা বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে সরকার দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসময় নতুন করে চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়া উদ্বেগজনক। এখনই সতর্ক না হলে সংক্রমণ কমানোর বিষয়টি অনিশ্চয়তার দিকে চলে যেতে পারে।

গবেষণা কার্যক্রমের সঙ্গে আরও যুক্ত ছিলেন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রভাষক মো. জিবরান আলম, রাহী হাসান চৌধুরী, এমফিল গবেষক অমিত দত্ত ও ডা. শুভ দাশ, গবেষণা সহকারী ইনজামামুল ইসমাইল শাওন, বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আবদুর রহমান অপু, মো. মিফতাহ মুশফিক ও অম্লান ভট্টাচার্য্য।

গত ৮ মে ভারত থেকে দেশে আসা দুইজনের শরীরে প্রথম করোনার ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছিল।  রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এবং ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভস (আইডিএসএইচআই)  এর গবেষণায় জানা গেছে, দেশে সংক্রমণের ৮০ শতাংশই ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২১
এমএম/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।