চট্টগ্রাম: ফটিকছড়িতে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আব্দুল হালিম সবুজ নামে এক ইউপি সদস্য প্রার্থীকে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া এ দিন রিপন নামে এক যুবককে অস্ত্রসহ আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফটিকছড়ি উপজেলার বাগানবাজার ইউনিয়নের গার্ডের দোকান এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া ইউপি নির্বাচনে বাগানবাজার ইউনিয়নে জয়লাভ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন সাজু।
নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রুস্তম আলী বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন শেষ হওয়ার পর থেকে নতুন নির্বাচিত হওয়া চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সাজুর অনুসারীরা আমার বাড়িতে কাউকে আসতে দিচ্ছে না, বাড়ি থেকেও কাউকে বের হতে দিচ্ছে না। বাজার সদাই নিয়ে আমার গাড়ির ড্রাইভার বাড়ির ভিতর প্রবেশ করতে চাইলে তাকেও মারধর করে। এক কথায় আমাকে ঘরবন্দি করে রেখেছে।
বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে কিনা জানাতে চাইলে রুস্তম আলী বলেন, সব কিছুই পুলিশ জানে। প্রতিহিংসার কারণে সবুজকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগও করেন তিনি।
সব অভিযোগ অস্বীকার করে বাগানবাজার ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সাজু বাংলানিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করা হচ্ছে সব কিছুই মিথ্যা ও বানোয়াট। নির্বাচনের সময় যাদেরকে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেয়নি তারাই সব কাজ করছে। তাছাড়া আমি যদি এমন কিছু করে থাকি তাহলে থানায় অভিযোগ দিতে পারে।
এসময় প্রতিবেদককে অভিযোগের বিষয়ে ভুজপুর থানায় খোঁজ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এদিকে, সবুজকে কুপিয়ে জখম করার ঘণ্টাখানেক না পেরুতেই একই এলাকা থেকে রিপন (২৫) নামে সন্দেহভাজন এক যুবককে একটি এলজি ও দুই রাউন্ড কার্তুজসহ আটক করেছে ভুজপুর থানা পুলিশ। আটক রিপন খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা থানার অযোদ্ধা গ্রামের জাফর আহমদের ছেলে।
অস্ত্র উদ্ধার ও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার কথা স্বীকার করেছেন ভুজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহাব উদ্দিন ও হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন।
ভুজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহাব উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, রিপন নামে একজনের কাছ থেকে একটি এলজি উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে থানায় আটক রাখা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে আরও তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী রুস্তম আলীকে গৃহবন্দি করে রাখার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা না বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি স্বীকার করলেও নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যানকে ঘরবন্দি করে রাখা ও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার বিষয়টি এড়িয়ে যান। এসময় তিনি বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সামান্য ঝামেলা হয়েছে। তবে এসব বিষয়কে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বলা যাবে না। তাছাড়া কোনো চেয়ারম্যানকে কেউ আটকে রেখেছে এমন কোনো খবর আমরা পাইনি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২১
এমআর/টিসি