চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: বসন্তের আগমন যখন ১৪ ফেব্রুয়ারি-বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে, তখন আমেজ তো একটু বেশিই হওয়ার কথা। হ্যাঁ, হয়েছেও তাই।
হয়েছে মেহেদি উৎসব, ফুলের কেনা-বেচা ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর ঘরোয়া পরিবেশে বসন্ত উৎসব।
মাথায় ফুলের রিং, পরনে হলুদ শাড়ী আর হাতে গোলাপ নিয়ে কেউ অপেক্ষা করছেন প্রিয় মানুষটির জন্য। আবার কেউ প্রেমিকার পছন্দের নীল পাঞ্জাবি গায়ে আগেভাগেই এসে বসে আছেন কোনও এক গাছের ছায়ায়। এ অপেক্ষার প্রহর যেন শেষই হচ্ছে না।
বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসটি যখন মিলেছে একই বিন্দুতে, তখন আর অপেক্ষা কিসের? আজই হোক মনের কথা প্রিয় মানুষটির কাছে প্রকাশের দিন। পাহাড়ি ক্যাম্পাসের শীতল বাতাসে নিজের অনুভূতি প্রকাশের আরেকটা সুযোগ নাও আসতে পারে। তাই এ উৎসবে যুবক-যুবতীদের প্রস্তুতিও কম না। আজকের এ দিনে ক্যাম্পাসে এক পলক তাকালেও অনুভব করা যাবে বসন্তের আমেজটা কতখানি বেড়ে চলেছে দিনের পর দিন।
তবে ব্যতিক্রমী মানুষ তো সবখানেই থাকে। আছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও। এমন একটি দিনের আনন্দ শুধু কপোত-কপোতীরা ভাগাভাগি করে নেবে, তা তো হয় না। তাই জীবনে প্রেম না আসা মানুষগুলোও ‘সিঙ্গেল ঐক্য পরিষদ’ গঠন করে নিজেদের দুঃখ কষ্ট উড়িয়ে দিতে মিছিলে মিছিলে ছড়িয়েছে আনন্দ। তাদের হাস্যরসাত্মক সব স্লোগানে ছিলো আনন্দের উচ্ছ্বাস। ‘লুঙ্গী, শাড়ী সমাবেশ ও বসন্ত বরণ’ এ শ্লোগানে তারা নীল পাঞ্জাবি আর হলুদ শাড়ীর পরিবর্তে লুঙ্গী আর শাড়ী পরে অংশ নিয়েছেন বসন্ত উৎসবে।
তবে বসন্তের এমন দিনেও সবার মনে নেই উচ্ছ্বাস। অনেকে এ উৎসবের কোনও যুক্তিও খুঁজে পাননি পুরো জীবনে। দারিদ্রের কষাঘাতে তাদের দরজায় বসন্ত নয়, বরং প্রতিনিয়ত কড়া নেড়েছিলো অবহেলা। সেই অবহেলার চাদর ছাড়িয়ে, উপেক্ষার দেয়াল ডিঙিয়ে আর অবজ্ঞার লাল দাগ মুছে জীবনের কোনও সীমারেখা ভাঙতে পারেনি তারা। সেই ছিন্নমূল মানুষগুলোও আছে আমাদের আশেপাশেই। একটা ফুলের টাকায় যাদের একবেলা খাবারের ব্যবস্থা হয়ে যায়। এ বসন্তে যেন ভুলে না যাই তাদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২
এমএ/টিসি