চট্টগ্রাম: সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনের সূত্রপাত হতেই ঘটনাস্থলে আসেন অলিউর রহমান। ডিপোতে শ্রমিকের কাজ করা এ তরুণ এরপরই নিজের মোবাইল ফোন দিয়ে ফেসবুকে লাইভ দিতে থাকেন ঘটনার দৃশ্য।
অবশ্য তখনো আগুন সেভাবে ছড়ায়নি।
রোববার (৫ জুন) ভোর থেকে স্বেচ্ছাসেবক দল বিএম ডিপো থেকে আগুনে পুড়ে কঙ্কাল হয়ে যাওয়া মরদেহ উদ্ধার করেন একে একে। এখনো চলছে সে উদ্ধার অভিযান।
সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে। পরে কর্তৃপক্ষ আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে জানায়। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি টিম ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। যখন আগুন লাগে ফায়ার সার্ভিসের আগুন নেভানোর দৃশ্য মোবাইল ধারণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ডিপোর অনেক কর্মী আর গাড়িচালক। হঠাৎ আগুনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়ে বিকট শব্দে কেমিক্যাল বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণে আগুন সবদিকে ছড়িয়ে পড়ে। একের পর এক কেমিক্যালের প্লাস্টিক কনটেইনার বিস্ফোরণে আশপাশের এলাকা প্রকম্পিত হয়। সেই দৃশ্যও ধারণ করছিলেন অনেকে। আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ডিপো থেকে বের হতে পারেনি অনেকেই।
স্বেচ্ছাসেবক টিমের সঙ্গে ডিপোর ভেতরে মরদেহ উদ্ধারের কার্যক্রমে দেখা যায়, অনেক মরদেহের হাতে মোবাইল ফোন রয়েছে। কেউ কেউ শক্ত করে মোবাইল ফোন ধরে আছেন। এমনও দৃশ্য দেখা মরদেহের পুরো শরীর ঝলসে গেছে, কিন্তু হাতে মোবাইল ফোন ধরে আছেন। আবার মরদেহ থেকে হাত বিচ্ছিন্ন অবস্থায়ও অনেককে পাওয়া গেছে।
আগুন দেখে দৌড়ে নিরাপদ স্থানে ছুটে আসতে পারা কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের। তারা বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে অনেক সহকর্মী লাইভ দিতে শুরু করেন। তখনও আগুনের তীব্রতা বাড়েনি। পরে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এরপরে অনেক সহকর্মীর হাত-পা-চোখ-কানসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ঝলসে যায়। আমরা উদ্ধারে ব্যস্ত ছিলাম। এ দৃশ্যও অনেকে মোবাইলে ধারণ করছিলেন।
রোববার (৫ জুন) বিকেলে পর্যন্ত বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৫ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক। এ ঘটনায় দুই শতাধিক মানুষ আহত ও অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। সংকটাপন্ন ৮ রোগীকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২২
বিই/এআর/টিসি