চট্টগ্রাম: ঈদের ছুটিতে নগরের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের উপচে পড়া ভিড়। পর্যটকদের কোলাহলে মুখর সব পর্যটনকেন্দ্র।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) সকাল থেকে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, কাজীর দেউড়ি শিশুপার্ক, ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, কর্ণফুলী শিশুপার্কে ছিল শিশু ও অভিভাবকদের ভিড়।
পতেঙ্গা সৈকত হাজারো মানুষের মিলনমেলায় মুখর। কেউ মেতে ওঠেন সমুদ্রস্নানে, অনেকে চড়েন স্পিডবোটে, কেউ কেউ ঘোড়ার পিঠে। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পরিবার আর বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান সৈকতে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই মানুষের সমাগম বেড়ে যায়।
এ ছাড়াও মেরিন ড্রাইভ সড়কও ছিল মানুষে ঠাসা। মোটরসাইকেল নিয়ে সৈকতে প্রবেশ না করে সড়কের পাশে সমুদ্র তীরে বসে গল্প-আড্ডা দিচ্ছেন অনেকেই।
পতেঙ্গা সৈকতে ঘুরতে আসা নাবিহা আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছর পরিবার নিয়ে এভাবে বের হওয়ার সুযোগ হয়নি। ঈদের দিন বাড়ি ছিলাম। এরপর শহরের বাসায় চলে আসছি। এখন পরিবারকে নিয়ে প্রথমে চিড়িয়াখানায় এরপর সৈকতে এসেছি। এখানে মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের দিন ১৪ হাজারের মতো দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করেছেন। সোমবার প্রায় ১৫ হাজার দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করেছে। আজ সকাল থেকেও মানুষের উপচে পড়া ভিড়।
তিনি বলেন, দিন দিন পর্যটক বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে আমরা পর্যটকদের সতর্ক করছি। মাস্ক পরতে অনুরোধ করছি।
সিআরবিতে ঘুরতে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহির মোহাম্মদ মাহফুজ বাংলানিউজকে বলেন, করোনার কারণে স্থবির ছিল পর্যটন কেন্দ্রগুলো। মানুষ ঘর থেকে বের হয়নি। এখন মানুষ একটু সুযোগ পেয়েছে। তাই ঈদের ছুটির দিনগুলোতে ঘুরতে আসছে। আমিও মা বাবাকে নিয়ে ঘুরতে এসেছি।
ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্কের ডেপুটি ম্যানেজার বিশ্বজিৎ ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, শুরু থেকে দর্শনার্থীর ভিড় ছিল। আমাদের এখানে বিদেশি পর্যটক ও দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থী আসেন। স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে আমরা অনেক কঠোর। তারপরেও অনেকে উদাসীন।
চট্টগ্রাম শিশু পার্কের জেনারেল ম্যানেজার নাছির উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। অনেকে ঈদের ছুটিতে বাড়ি ছিল তারা শহরে আসছেন। যার কারণে পর্যটকদের সংখ্যাও বাড়ছে। মাস্ক ছাড়া কোনো দর্শনার্থীকে প্রবেশ করতে দিচ্ছি না। স্বাস্থ্যবিধি পালনে আমরা কঠোর।
পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। সৈকতে ফুট পেট্রল, মোটরসাইকেল, মোবাইল টহল বাড়ানো হয়েছে।
পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সৈকতে ফুট পেট্রল, মোটরসাইকেল, মোবাইল টহল বাড়ানো হয়েছে, যাতে নারী পর্যটকরা কোনো হয়রানির শিকার না হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২২
বিই/টিসি