ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কোর্ট হিলের ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও অবৈধ স্থাপনা অপসারণে ফের চিঠি 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২২
কোর্ট হিলের ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও অবৈধ স্থাপনা অপসারণে ফের চিঠি  ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম: জেলা আইনজীবী সমিতির ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও অবৈধ স্থাপনা অপসারণে নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

সোমবার (১৮ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব সাইফুল ইসলাম ভূইয়া স্বাক্ষরিত চিঠি সচিব, আইন ও বিচার বিভাগকে প্রদানপূর্বক উল্লিখিত  অনুশাসন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক বাস্তবায়ন অগ্রগতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অবহিত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতসহ ৭১টি আদালতের অবস্থান চট্টগ্রাম জেলা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত পরীর পাহাড় নামক ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত ১১ দশমিক ৭২ একর পাহাড় / টিলা শ্রেণির জমির ওপর। বর্তমানে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়টি অবস্থিত অপূর্ব নান্দনিকতায় কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিংয়ের আদলে ১৮৯২-৯৪ সালে নির্মিত একটি দ্বিতল ভবনে।

এছাড়াও, এখানে বিচার বিভাগের ৭১টি আদালত অবস্থিত সাম্প্রতিক সময়ে নির্মিত ৩টি বহুতল ভবনে। তৎকালীন সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের সময়ে ১৯৭৭ সালে মাত্র দশমিক ১২৯০ একর তথা ১২ দশমিক ৯০ শতক জমি লিজ নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি দেশের সংশ্লিষ্ট সকল প্রকার আইন-কানুন ও বিধি বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তদস্থলে ১ দশমিক ৭৯ একর সরকারি খাসজমি জবর দখল করে গত ২০ বছরে একের পর এক গড়ে তুলেছে সর্বোচ্চ ১১/১২ তলা ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ বহুতল ভবন। এ সকল ভবনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ছোট বড় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা। বর্তমানে পরীর পাহাড়টিতে অপরিকল্পিতভাবে মাত্রাতিরিক্ত অবৈধ স্থাপনার কারণে পাহাড়ধস, ভূমিধস, অগ্নিঝুঁকি, নিরাপত্তা ঝুঁকিসহ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের আগস্ট মাসের দ্বিতীয় পক্ষের পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনের আলোকে  প্রধানমন্ত্রী পরীর পাহাড়ে আইনজীবীদের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনসহ সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং পরীর পাহাড়ে যাতে আর কোনো স্থাপনা নির্মিত না হয় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণার্থে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা প্রদান করেন।

এসব নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে জেলা আইনজীবী সমিতি নির্বিচারে বৃক্ষ কর্তন করে সম্পূর্ণ অনুমোদনবিহীন একটি বহুতল ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি চট্টগ্রাম ওয়াসা এবং জেলা প্রশাসনের আপত্তি ও বাধাকে উপেক্ষা করে বেলে মাটির এ পরীর পাহাড়ে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে।

এতে আরো বলা হয়, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির এ সকল পরিবেশ বিধ্বংসী, অননুমোদিত, অনৈতিক, অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ কর্মকাণ্ডের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে মধ্য জুনের প্রবল বর্ষণে পরীর পাহাড়ের ২/৩টি স্থানে পাহাড় ধস দেখা দিয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলীগণ পাহাড় ধসের স্থান পরিদর্শন করে অনতিবিলম্বে এখানে মজবুত রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ এবং এ পাহাড়ের মাত্রাতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ স্থাপনাসমূহ অপসারণের জন্য পুনরায় তাগিদ দেন ।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং পরিবেশ অধিদপ্তর আইনজীবী সমিতির এ সকল ভবনসমূহকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তাদের রিপোর্টে মতামত দেন । পরীর পাহাড়ের এই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা এখানে অবস্থিত অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা যেমন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, বিচার বিভাগের ৩টি ভবন, পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ ব্যাংক, জেলা ও সাব রেজিস্টার অফিস, সিডিএ ভবন, নিউ মার্কেট ও জহুর হকার মার্কেটের ওপর মারাত্নক ধস ও জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে ।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ভবন ও এর আশপাশের অবৈধ স্থাপনাসমূহের কারণে এ পাহাড়ে উঠানামার একমুখী রাস্তাটি অতি সংকুচিত হয়ে পড়েছে । কোনো ভারী যানবাহন এমনকি ফায়ার সার্ভিসের কোনো মাঝারি আকৃতির গাড়ি এ রাস্তায় প্রবেশ করতে পারে না। ফলে এখানে কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা দুর্ঘটনা ঘটলে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে এবং কোনো উদ্ধারকারী যানবাহন বা সরঞ্জাম এখানে পৌঁছাতে পারবে না।

এর আগেও প্রায় ২৫টি সরকারি দফতর থেকে পরির পাহাড় থেকে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা উচ্ছেদে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২২ 
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।