ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ আশ্বিন ১৪৩১, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে মৌলিক অধিকার পূরণের দাবি 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২২
চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে মৌলিক অধিকার পূরণের দাবি  বক্তব্য দেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।

চট্টগ্রাম: চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি যৌক্তিক। চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে ৩০০ টাকা ও তাদের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে চট্টগ্রামে এক সমাবেশ থেকে।

সোমবার (২২ আগস্ট) বিকেলে নগরের চেরাগী পাহাড় মোড়ে ‘সচেতন নাগরিকবৃন্দ, চট্টগ্রাম’ আয়োজিত এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, চা শ্রমিকদের বেতন মাত্র ১২০ টাকা।

অথচ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করার লোক এ দেশে আছে। এর স্থায়ী সমাধান করতে হলে রাষ্ট্রীয় কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে চা শ্রমিকদের অনেক ত্যাগ। মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় কেন্দ্র ছিল চা শ্রমিকদের বাড়ি। তাদের জীবনমান আজো মানবেতর।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, শ্রমিকদের রক্তের উপর হাজার কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন মালিকরা। অথচ ৩০০ টাকা মজুরি দিতে পারছে না। শ্রমিকদের উপর এ অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। রক্ত চুষে যারা সম্পদ গড়েছেন তারা দাবি মেনে নিন। সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয়কে বলব অবিলম্বে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মত সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণ করা হোক। তা যেন কমপক্ষে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সমান হয়। আজ শ্রমিক সমাজের কোনো স্বপ্ন নেই। সন্তানদের ভবিষ্যত গড়তে পারে না। চা শ্রমিক সহ সকল শ্রমিকের ঘামের শ্রমের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে। চা শ্রমিকদের বছরের পর বছর যে শোষণ করা হয়েছে এর জবাব একদিন দিতে হবে।

প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বলেন, নিরীহ বঞ্চিত চা শ্রমিকরা জীবনের প্রয়োজনে পথে নেমেছেন। তাদের যে ঘর দেয়া হয় তা মানুষের বাসযোগ্য নয়। স্কুল থাকা বাধ্যতামূলক। অথচ অনেক চা বাগানে স্কুলই নেই। প্যারাসিটামল ছাড়া ওষুধ নেই। পরিবার নিয়ে ১২০ টাকায় কি করে চলেন? শ্রমিকরা কেউ মানেনি ১৪৫ টাকা। তারা হয়ত পেটের জ্বালায় বাগানে ফিরেছেন। কত কেজি পাতা তুললে ১২০ টাকা বেতন দেয়। এটা কেউ বলছেন না। আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, সংবেদনশীল হোন। চা বাগান মালিকদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য করুন। কোনো বাগান মালিক তো আজো ব্যবসা ছেড়ে চলে যায়নি। এ বর্বরতা মেনে নেয়া যায় না।  

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার আবিদুর রহমান বলেন, মাসে মাত্র ৯ হাজার টাকা বেতনের দাবি কোনো অযৌক্তিক দাবি নয়। আজকের দিনে ৯ হাজার টাকায় কি করে একটি সংসার চলে?

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নাট্যজন প্রদীপ দেওয়ানজী, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, ন্যাপ কেন্দ্রীয় নেতা মিটুল দাশগুপ্ত, জাসদ নেতা জসিম উদ্দিন বাবুল, আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান, আবৃত্তি শিল্পী প্রণব চৌধুরী, যুব ইউনিয়ন সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুল সামির, আবৃত্তি শিল্পী ও সাংবাদিক অনুপম শীল, বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সিঞ্চন ভৌমিক। সাংবাদিক প্রীতম দাশের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ঋত্বিক নয়ন, আমিনুল ইসলাম মুন্না, আল আমিন সিকদার, মিনহাজুল ইসলাম, সোলাইমান আকাশ, মিনু মিত্র, মোহাম্মদ রিয়াদ ও মোহাম্মদ জাফর প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২২
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।