চট্টগ্রাম: সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুরের সরকারি ৩ হাজার ১০০ একর জমিতে সরকারি নানান স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষার্থে এ উদ্যোগ নেয় সরকার।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিবুল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় জননিরাপত্তা বিভাগ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, ভূমি মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ এর সিনিয়র সচিব সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশ, র্যাব, আনসার ও গ্রাম রক্ষা বাহিনী এর প্রধানগণ চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম. রেজাউল করিম ও সিডিএ চেয়ারম্যানকে বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
প্রায় তিন দশক ধরে জঙ্গল সলিমপুরের পাহাড়ে হাজারো অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এছাড়া এখানে বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে ওঠেছে। গত এক মাস ধরে জেলা প্রশাসন সেখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
জানা গেছে, একসময় জঙ্গল সলিমপুর চট্টগ্রামের এক বিচ্ছিন্ন এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল। যেখানে প্রবেশ করতে গেলেও ভূমিখেকো ও সন্ত্রাসীদের দেওয়া পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ ঢুকতে পারতোনা। প্রশাসনের কেউ যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্যে তাদের নজরদারী ছিলো। এলাকাটি ছিলো সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য। জঙ্গল সলিমপুর এলাকাটিতে অনেক পাহাড় রয়েছে কিন্তু ভূমিখেকো ও সন্ত্রাসীরা পাহাড় কেটে সাবাড় করে প্লট বিক্রয় করে আসছে। যার কারণে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ভূমি খেকোরা পাহাড় কেটে, অবৈধ বিদ্যুত সংযোগসহ অবৈধভাবে আবসস্থল তৈরী করেছে। পরে নজর দেয় জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জঙ্গল সলিমপুরে বেশ কয়েকটি অভিযানে প্রায় ৩ হাজার ১০০ একর খাস জমি উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। সলিমপুরের ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা করা হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা জঙ্গল সলিমপুর এলাকার বেহাত হয়ে যাওয়া প্রায় ৩ হাজার ১০০ একর খাস জমি উদ্ধার করেছি। বেহাত হওয়া খাস জমি ভূমিদস্যুরা সাধারণ মানুষের কাছে প্লট অনুযায়ী দখলস্বত্ব বিক্রয় করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি মামলা করা হয়েছে এবং কয়েকজন কারাগারেও আছেন।
তিনি আরও বলেন, জঙ্গল সলিমপুরের উদ্ধার হওয়া ৩ হাজার ১০০ একর খাস জমির বিষয়টি সরকারের নজরে আসে। সেজন্যই পাহাড় ও বন রক্ষা করে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য আনয়ন ও জীববৈচিত্র রক্ষার্থে পুনরায় কিভাবে জঙ্গল সলিমপুর এলাকাটিকে সবুজায়নের মাধ্যমে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায় সে নিমিত্তে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক হতে যাচ্ছে। এ মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যেমে জঙ্গল সলিমপুর এলাকার অন্ধকার যুগের অবসান ঘটবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২২
বিই/টিসি