ঢাকা, শনিবার, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৫ মে ২০২৪, ১৬ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

গ্রামাঞ্চলে বাড়ছে ডায়াবেটিসের হার, আক্রান্ত গৃহিণীরাও

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২২
গ্রামাঞ্চলে বাড়ছে ডায়াবেটিসের হার, আক্রান্ত গৃহিণীরাও ...

চট্টগ্রাম: দিন দিন বাড়ছে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আর এ রোগের কারণে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় ভুগছেন তারা।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডায়াবেটিসে ভুগছেন গৃহিণীরা। শুধু তাই নয় তরুণদের মধ্যেও গত এক দশকে এ রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে দ্বিগুণ।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগ, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতাল এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের জনস্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।  

গবেষণায় দেখা গেছে, ৬০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগীর মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা প্রকট। এছাড়া ডায়াবেটিসে ভুগছেন এমন রোগীরা দীর্ঘমেয়াদী জটিলতায় যেমন- স্নায়ুবিক সমস্যা, চোখের সমস্যা, পায়ের সমস্যা, হৃদরোগে আক্রান্ত।  

২১০০ জনের ওপর পরিচালিত এ গবেষণায় দেখা যায়, ডায়াবেটিস আক্রান্ত ৬০ শতাংশ রোগী শহরের এবং বাকি ৪০ শতাংশ রোগী গ্রামের। আবার গ্রামের আক্রান্ত মোট রোগীর মধ্যে ৫৯ জনই নারী।  

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা জার্নাল প্লস ওয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, শহরের মতো গ্ৰামেও ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। অর্ধেকের বেশি ডায়াবেটিস রোগী বিষন্নতায় ভুগেন, চলাফেরায় সমস্যা অনুভব, দুর্বলতা, ব্যথা ও অস্বস্তি অনুভব করেন। চট্টগ্রামের উচ্চবিত্ত এলাকার মধ্যে ডায়াবেটিসের প্রকোপ বর্তমানে বেশি হলেও নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের মধ্যেও এর হার কম নয়। প্রায় ৫০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী তাদের জীবনযাত্রার মান নিয়ে সন্তুষ্ট নয় বলে উঠে আসে গবেষণায়।

গবেষণায় নেতৃত্বে দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকলোজি বিভাগের শিক্ষক আদনান মান্নান এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ডায়াবেটিস হরমোন রোগ বিভাগের প্রধান ডা. ফারহানা আক্তার।

অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, বিষন্নতায় থাকা ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ এর ডায়াবেটিস বিভাগের প্রধান ডা. ফারহানা আক্তার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন,  চট্টগ্রামে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা গত বিশ বছরে তিনগুণ বেড়ে গেছে। এর মধ্যে ৩০ ভাগের ক্ষেত্রেই ওষুধ সেবন, হাঁটা-চলা কোনোটির মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের পেছনে চট্টগ্রামের ভৌগোলিক অবস্থানও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন জিনগত পরিবর্তন ও প্রভাব নিয়ে কাজ করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। ভবিষ্যতে রোগীদের নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, পরিমিত খাদ্যাভ্যাস ও দৈহিকভাবে সক্রিয় থাকার জন্য কিশোর কিশোরীদের সচেতন থাকতে হবে।

গবেষকদলে আরও ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাইম চৌধুরী ও মাহবুব হাসান, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালে উপ পরিচালক ডা. নওশাদ আজগর চৌধুরী, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের জনস্বাস্থ্য বিভাগের ডা. নাজমুল আলম ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ডা. মাসুদ রানা।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২২
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।