ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ভারতে এবার উপরাষ্ট্রপতি পদে বাঙালি!

নয়াদিল্লি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১২
ভারতে এবার উপরাষ্ট্রপতি পদে বাঙালি!

নয়াদিল্লি: ইউপিএ প্রার্থী প্রণব মুখার্জির ভারতের রাষ্ট্রপতি হওয়ার আর মাত্র কয়েকদিনের প্রতীক্ষা।

বিরোধী প্রার্থী পি এ সাংমা থাকলেও বড় কোনো অঘটন না ঘটলে তার এই পদে নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা কম।

এদিকে, এবার রাষ্ট্রের দুই শীর্ষ পদে আসীন হতে চলেছেন কিন্তু দুই বাঙালি।

এবার এই দুই শীর্ষপদে সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য দিক, যারাই প্রার্থী হয়েছেন এখন পর্যন্ত শাসক দল বা বিরোধী দলের তাদের সঙ্গে কলকাতা আর পশ্চিমবঙ্গের নাম জড়িয়ে। রাষ্ট্রপতি বিরোধী প্রার্থী পি এ সাংমার মেঘালয়ের বাসিন্দা হলেও পড়াশোনা কলকাতায়। এই তিনজনই বাংলায় কথা বলতে পারেন।

অন্য দিকে, উপরাষ্ট্রপতি পদে ইউপিএ প্রার্থী হামিদ আনসারী জন্মসূত্রে বাঙালি। কলকাতায় তার জন্ম-পড়াশোনা-বেড়ে ওঠা ৷ পুরো নাম মহম্মদ হামিদ আনসারি৷ বাংলার সঙ্গে নাড়ির টান। তিনি বাঙালি। ১৯৩৭-এর ১ এপ্রিল জন্ম তার।

উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরের আদি বাসিন্দা আনসারী পরিবারের এই সন্তান জন্ম নিয়েছিলেন  কলকাতার বুকে। তখন স্বাধীনতা সংগ্রামে উত্তাল কলকাতা।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সামনের সারির নেতা কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি মুক্তার আহমেদ আনসারী। তারই নাতি মেধাবী হামিদ আনসারী প্রথমে উজ্জ্বল ছাত্র হিসেবে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স। তার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

এরপর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি। অনেক পরে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও হয়েছিলেন।
 
দাদাকে অনুসরণ করে রাজনীতিতে প্রথমে না গিয়ে প্রবেশ করেছিলেন কূটনীতির আঙিনায়। ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে বিভিন্ন দেশে কাজ করার মধ্য দিয়ে।

১৯৬১ সালে যোগ দেন ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিসে। ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে একে একে তিনি কাজ করেছেন অস্ট্রেলিয়া, আরব আমির শাহী, আফগানিস্তান, ইরান ও সৌদি আরবে। জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এই পশ্চিম এশিয়া বিশেষজ্ঞ।

১৯৮৪-তে পান সফল কূটনীতিক রূপে পদ্মশ্রী সম্মান। ২০০০ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদের দায়িত্ব নেন। ২০০২ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্বেই ছিলেন হামিদ আনসারী।

তার লেখা বই `ট্রাভেলিং থ্রু কনফ্লিক্টস` যথেষ্ট আলোড়ন ফেলে ৷ ২০০৬ সালে কাশ্মীরের সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে আস্থার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে তৈরি হয় একটি বিশেষ কমিটি। যার চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।

সেই সময় জাতিগত সমস্যার সমাধান, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ভূ-স্বর্গে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রশ্নে সরব হয়েছিলেন তিনি ৷ ২০০৬, ২০০৭ সালে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনের দায়িত্বও পালন করেন ৷

২০০৭ চলে আসেন বামেদের সমর্থনে প্রথম ইউপিএ সরকারের সময় উপরাষ্ট্রপতি পদে তাকে প্রার্থী করে কংগ্রেস৷ নাজমা হেফতুল্লাকে দু’শো ২২ ভোটে হারিয়ে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন বাঙালি হামিদ ৷

এর আগে দু’বার উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার নজির একমাত্র সর্বেপল্লি রাধাকৃষ্ণনের ৷ এবার উপরাষ্ট্রপতি হলে সেই আসনে চলে আসবে হামিদ আনসারীর নামও৷

মৃদুভাষী, শিক্ষাব্রতী আনসারী নিজেকে পরিচয় দেন কলকাতার ছেলে বলেই ৷
উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার পর কলকাতায় প্রথম এসেই নস্টালজিয়ায় তাড়িত আনসারী বার বার ফিরে গিয়েছিলেন সেদিনের সেই ফেলে আসা ছাত্রজীবনের দিনগুলোয়৷

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।