কলকাতাঃ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আহ্বনে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার মহাকরণে এসে আত্মসমর্পণ করেছেন মাওবাদী কমান্ডার জাগরী বাস্কে।
এদিন তিনি তার স্বামী মাওবাদী নেতা রাজারাম সোরেন ও তাদের শিশুপুত্র বাহাদুরকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আসেন।
স্বামী-স্ত্রী দু’জনই সক্রিয় মাওবাদী সদস্য ছিলেন। এ দম্পতি এদিন দুপুরে জলপাই রঙের সামরিক পোশাক পরে রাজ্য পুলিশের ডিজি নপারিজিত মুখার্জির কাছে যান। পরে তারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেখা করেন।
সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসার জন্য মুখ্যমন্ত্রী তাদের অভিনন্দন জানান।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি ওদের ফিরে আসায় খুশি। যারা ভুল বুঝে চলে গেছেন, তারাও ফিরে আসুন। আমরা সব রকমের সাহায্য করব। ওদের সরকারি প্যাকেজ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমি জাগরীর কাছ থেকে শুনেছি। ওরা(মাওবাদীরা) মেয়েদের ওপর অত্যাচার করে। গরিব মানুষের ওপর অত্যাচার করে।
মাওবাদী দম্পতির ছোট্ট শিশু বাহাদুরকে আদর করে মমতা বলেন, এই শিশুটি খুব বুদ্ধিমান। ওর পড়াশোনার দায়িত্ব সরকার নেবে। ওকে বারো ক্লাশ পর্যন্ত পড়ানো হবে। রামকৃষ্ণ মিশনের মতো প্রতিষ্ঠান যেখানে হস্টেল আছে সেখানে রেখে পড়াশোনা করানো হবে।
আত্মসমর্পণকারী জাগরী ও রাজারাম বলেন , ১০ বছর আগে তারা মাওবাদী দলে নাম লিখিয়ে জঙ্গলমহলে মাওবাদী কার্যকলাপে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। বেশ কিছু অপারেশন তারা করেছেন। কিন্তু সম্প্রতি মাওবাদীদের নীতির বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটেছে। তারা সাধারণ মানুষকেও হত্যা করছে।
তারা আরও বলেন, বর্তমান সরকারও জঙ্গলমহলের উন্নয়নে সচেষ্ট। মাওবাদীদের আত্মসমর্পণের যে প্যাকেজ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে, তা তাদের কাছে আকর্ষণীয় মনে হয়েছে। তাই তারা আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেন।
কিছুদিন আগেই তারা পুরুলিয়া জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জেলা পুলিশের সহযোগিতায় আজ তারা আত্মসমর্পণ করলেন বলে জানান তারা।
কলকাতার রাজনৈতিক মহল মনে করছে, শিলদা যৌথবাহিনীর ক্যাম্পসহ জঙ্গলমহলে বিভিন্ন নাশকতার নেতৃত্ব দেওয়া প্রায় কিংবদন্তী তুল্য মাওবাদী নেত্রী জাগরীর এই আত্মসমর্পণ মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা ব্যানার্জির একটি বড় রাজনৈতিক সাফল্য।
উল্লেখ্য, গত এক মাসের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ নিয়ে ৫ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১১