কলকাতা: সরকারি হাসপাতালে শিশুচুরির ও সড়কে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় দায় এড়াল রাজ্য সরকার। শুধু তাই নয়, দু’টি ঘটনাতেই রোগীর পরিবারকে দোষারোপ করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা।
রোববার কলকাতার স্বাস্থ্যভবনে সাংবাদিক বৈঠকে বেশ আক্রমণাত্মক ছিলেন দফতরের কর্তারা। দু’টি ঘটনার তদন্ত চলাকালীন রোববার স্বাস্থ্যভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন স্বাস্থ্য দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। হাজির ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রও। তার উপস্থিতিতেই রীতিমতো আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে সমস্ত দায় অস্বীকার করেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
ঘটনায় দুই প্রসূতির আত্মীয়দের দায়িত্বজ্ঞানহীনতাকে দায়ী করেন তারা। প্রসূতি উষা দেবীর মৃত্যু প্রসঙ্গে তারা বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে মৃত অবস্থাতেই হাসপাতালে আনা হয়েছিল তাকে। ফলে তাকে ভর্তি নেয়নি দু’টি হাসপতালই। এর পর পুলিশি জটিলতা থেকে বাঁচতে দেহ নিয়ে চলে যায় মৃতার পরিবার।
এদিন স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, প্রসূতি কার্ড না-থাকলেও সরকারি হাসপাতাল থেকে ফেরনো হয় না কোনও অন্তঃসত্বাকে।
ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে শিশুচুরির ঘটনায় স্বাস্থ্যকর্তাদের সাফাই আরও বিস্ফোরক। শিশুচুরি রোখা সম্ভব নয় বলে এদিন সাফ জানিয়ে দেন রাজ্যের শিক্ষা-স্বাস্থ্য অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়।
আধিকারিকদের দাবি, তানিশ ফতিমার আত্মীয়দের গাফিলতিতেই চুরি গিয়েছে শিশুটি। ঘটনায় যে মহিলাকে সন্দেহভাজন বলে চিহ্নত করা হয়েছে, তিনি তানিশের পূর্বপরিচিত বলে দাবি করেছেন কর্তারা।
তাদের যুক্তি, অনাত্মীয়ের হাতে কেউ দেড় দিনের সদ্যোজতের দেখভালের দায়িত্ব দেয়?
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে যুক্তির জাল তৈরি করে স্বাস্থ্য দফতর দায় এড়ানোর চেষ্টা করলেও, উল্টো দফতরের কর্তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে একাধিক স্ববিরোধিতা।
সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, তাহলে উষা দেবীকে কোনও কোনও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তা কেন বলতে পারছে না স্বাস্থ্য দফতর? পুলিশি হয়রানি এড়াতে মৃতার আত্মীয়রা কীভাবে দেহ হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন? কেন দেহটির ময়নাতদন্ত হলো না। তাহলে কি কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে একাজ করা যায়?
এদিকে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি উড়িয়ে দিয়ে নিখোঁজ শিশুটির আত্মীয় জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন মহিলাকে তারা চেনেন না।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১২