ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ফার্নেস অয়েলের ওপর সব কর বাতিল হচ্ছে

হাসান আজাদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১০
ফার্নেস অয়েলের ওপর সব কর বাতিল হচ্ছে

ঢাকা : বেসরকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়াতে সরকার ফার্নেস অয়েলের উপর সব ধরনের কর বাতিল করছে। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি সার-সংক্ষেপ অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতরে যাচ্ছে।



বিদ্যুৎ সচিব আবুল কালাম আজাদ এ বিষয়ে বাংলানিউজ’কে বলেন, ‘বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফার্নেস অয়েলের ওপর কর বাতিল বা কমানো হলে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচও কমে আসবে। তবে এতে করে সরকারের আয়ও কমবে। ’

এরই মধ্যে যে নব বেসরকারি কোম্পানীর সঙ্গে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ বিষয়ে চুক্তি হয়েছে তারা এই সুযোগ পাবে কিনা প্রশ্ন করা হলে বিদ্যুৎ সচিব বলেন, ‘চুক্তিতেই উল্লেখ আছে তেলের দাম অনুযায়ী  বিদ্যুতের দাম নির্ধারন করা হবে। সুতারাং চুক্তি করে ফেলা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো এই সুযোগ পাবে। ’

তবে তিনি ফার্নেস অয়েলের দাম কমানোর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমরা সামনে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বলবো বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিমার্ণ করতে। আর বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিমার্ণ করার আগে উদ্যোক্তারা ভাববেন লাভ কেমন হবে এবং সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচের সঙ্গে কেমন পার্থক্য হবে।

এ মুহূর্তে ফার্নেস অয়েলের দাম কমানো হলে বেসরকারি পর্যায়ে উৎপাদিত বিদ্যুৎ খরচ সরকারি পর্যায়ে বিদ্যুৎ খরচের সমান হয়ে যাবে বলে মত দিয়ে তিনি বলেন, ‘এ অবস্থায় বড় বড় শিল্প কারখানাগুলো বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনতে আগ্রহী হবে। একই সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের উপর চাপ কমে আসবে। ’

জ্বালানি বিভাগের উর্দ্ধতন এক কর্মকর্তা বলেন, গত ২৮ আগস্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বৈঠকে  বেসরকারি পর্যায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেল আমদানীতে শুল্ক ছাড়ের ঘোষনা দেন। পরে একই বিষয়ে গত সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় ফার্নেস অয়েলের উপর সকল ধরনের কর মত্তকুফের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিষয়টি চুড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানোর কারণে তৈরি সার সংক্ষেপে বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশে গ্যাসের সংকট চলছে। এই অবস্থায় গ্যাসের বিকল্প তেল নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিমার্ণ করতে হচ্ছে বেসরকারি ও সরকারি উভয় পর্যায়ে। এই অবস্থায় তেলের দাম বেশি হওয়ার কারণে একদিকে যেমন উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম বেশি হচ্ছে, অপরদিকে, বেসরকারি উদ্যোক্তারা তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

তাই ফার্নেস অয়েলের ওপর থেকে যদি সব ধরনের কর মত্তকুফ করা হয় তাহলে বেসরকারি পর্যায়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিমার্ণে আগ্রহী হবেন উদ্যোক্তরা।

এতে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে দেশে উৎপাদিত ফার্নেস অয়েলের উপর কোম্পানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ে খুচরা মুল্যের উপর আরও ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ মোট ৩০ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। অপর দিকে, ফার্নেস অয়েল আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ১২ শতাংশ, ভ্যাট ১৫ শতাংশসহ ইন্স্যুরেন্স ও বিবিধ মিলে মোট ৩১ দশমিক ৬৯৮ শতাংশ ভ্যাট পরিশোধ করতে হয়।

এদিকে, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ফার্নেস অয়েল লাগবে মোট ২০ হাজার ৬১৫ টন। আগামী বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ১২ হাজার ২১৬ টন করে মোট ২৪ হাজার ৪৩২ টন, মার্চ মাসে ৭৩ হাজার ৮৩৩ টন, এপ্রিল, মে, জুন ও জুলাই মাসে লাগবে ৭৭ হাজার ৬৫০ টন করে মোট ৩ লাখ ১০ হাজার ৬শ টন, আগস্ট মাসে ৯৬ হাজার ৭৩৮ টন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে এক লাখ ১২ হাজার ৯ টন করে মোট দুই লাখ ২৪ হাজার ১৮ টন ও ডিসেম্বর মাসে লাগবে এক লাখ ২৪ হাজার ৯৮৮ টন।

বাংলাদেশ সময় : ১৯১৯, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১০।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।