ঢাকা: দ্রব্যের দাম যেভাবে বাড়ছে, সেটা নিয়ে চ্যালেঞ্জ আছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
দ্রব্যের দাম বাড়ছে, এটা বাস্তবতা, অস্বীকার করে লাভ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা নিয়ে একটি চ্যালেঞ্জ আছে। প্রধানমন্ত্রী প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এটা নিয়ে আমরা কাজে বসেছি।
নির্বাচনের পর কী কী চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সাময়িক বিষয় নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে আছি। নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন একটা চ্যালেঞ্জ। কোটি যুবককে পাঁচ বছরে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। এছাড়া বর্তমান যে চ্যালেঞ্জ সেটা হলো দ্রব্যমূল্যকে নিয়ন্ত্রণ করা। আমাদের ডলার সংকট আছে, রিজার্ভ সংকট আছে, জ্বালানি সংকট আছে, এসব সংকট নিয়ন্ত্রণে। এগুলো জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এটা বড় চ্যালেঞ্জ, এগুলো মোকাবিলার জোর দেওয়া। প্রধানমন্ত্রী প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা কাজে বসেছি।
দ্রব্যের ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এটা বলবো কেন এটা বাস্তবতা। আমার অস্বীকার করে কোনো লাভ আছে।
প্রতিবছর সড়কগুলোর টোল বাড়ানো হয় সেটা সমন্বয় করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বহুদিন অনেক রাস্তার টোল নেই। অন্যান্য দেশ যেভাবে টোল নিচ্ছে যে হারে নির্ধারণ করে আনুপাতিক আমরা তো বাইরে যাইনি এবং যাবো না। তবে টোলের সমন্বয় করতে হবে। তা নাহলে সবকিছুর খরচ বাড়বে, আমাদের রাস্তাগুলো যখন নষ্ট হয়ে যায়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেগুলো মেরামত আমাদের করতে হয়। সেই টাকা আমরা কোথা থেকে পাবো।
পণ্য ও পরিবহনের দামতো আরেক দফা বাড়বে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো কারণ না থাকলে কেন বাড়বে। রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হলে পণ্য পরিবহনও অসুবিধা হবে। সময়ের ব্যাপার, অর্থের ব্যাপার, কাজে রাস্তা ভালো থাকলে অনেক কিছুই ভালো। এখন রাত ৮টা বাজে মতিঝিল মেট্রো স্টেশনে হাজার হাজার লোক দাঁড়িয়ে থাকে। এগুলোতো উন্নয়ন, এগুলোর জন্যতো আমাদের পয়সা খরচ করতে হয়। টোল না নিলে এগুলো কোথা থেকে মেটাবো।
ভারতের সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে, জানতে চাইলে কাদের বলেন, আমাদের নির্বাচনকে সামনে রেখে সার্বিক পরিস্থিতিতে ভারত আমাদের সঙ্গে প্রতিবেশীসুলভ আচরণ করেছে। বিএনপি যখন কোন রাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে নির্বাচন ভন্ডুল করতে চেয়েছিল, তখন ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি মনে করি, সংশয় ও অবিশ্বাসের দেয়াল অবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভেঙে দিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের চিড় ধরার কোনো কারণ নেই।
রাজনীতি উত্তপ্ত হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নতুন সরকারের কাজে যখন বাধা আসবে, তখন সেটা আমাদের অতিক্রম করতে হবে। তারা (বিএনপি) এখানে যদি সহিংসতা বা সহিংস কোনো কর্মসূচি দেয় কিংবা সাধারণ কর্মসূচি দিয়ে সহিংসতা করে, তবে সেটার মোকাবিলা আমাদের করতে হবে। কারণ আমরা ক্ষমতায় আছি, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা আমাদের দিতে হবে।
সরকার মেয়াদপূর্ণ করতে পারবে না, বিএনপির এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি এ পর্যন্ত যত স্বপ্ন দেখেছে, সবই দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অনেক দিন পর গতকাল আবির্ভূত হলেন, এত দিন পলাতক ছিলেন। তিনি এত দিন কোথায় পালিয়ে ছিলেন, সেই জবাব তো পেলাম না।
‘কঠিন সময় পার করা, চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করার সৎ সাহস আমাদের আছে। আমরা পেরেছি, ভবিষ্যতেও পারবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে দায়িত্ব আমরা নিয়েছি, সেটা আমরা পালন করবো। ’
বিরোধীদল কারা হবে, এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, এখানে তো বিরোধীদল বলতে জাতীয় পার্টিই সামনে আসে। তারা আগেও ছিল। তাদের অনেকে অভিজ্ঞ আছেন। আগেও তারা সংসদ চালিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২৪/আপডেট সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা
জিসিজি/এএটি