ঢাকাঃ পুঁজিবাজার চাঙ্গা থাকায় মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মার্জিন লোন রেশিও (শেয়ারের অনুপাতে নির্ধারিত ঋণ) পরিবর্তনের বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। এতে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মার্জিন লোন রেশিও আপাতত বাড়ছে না।
এসইসি‘র সদস্য মনসুর আলম জানান, ‘এসইসি এখানো মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মার্জিন লোন রেশিও কমানো কিংবা বাড়ানোর বিষয়ে নতুন করে কিছু ভাবছে না। তবে প্রয়োজন মনে করলে কমিশন যে কোনো মুর্হুতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। ’
তবে এসইসির আরেকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজার বেশ চাঙ্গা থাকায় এই মুর্হুতে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মার্জিন লোন রেশিও পরিবর্তনের কথা ভাবছে না এসইসি। চাঙ্গাবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মার্জিন রেশিও বাড়ানো হলে বাজার আরো চাঙ্গা হয়ে উঠবে।
বর্তমানে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে ঋণ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এসইসি‘র নির্দেশনা অনুযায়ী সর্বোচ্চ এনএভি‘র সাড়ে সাত শতাংশ পর্যন্ত মার্জিন লোন সুবিধা দিতে পারবে। অর্থাৎ কোনো মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য যদি ১০০ টাকা হয় এবং ওই ফান্ডের ইউনিটের দাম যদি ১০৭ টাকা ৫০ পয়সার মধ্যে থাকে, তাহলেই কেবল ওই ইউনিটের বিপরীতে মার্জিন লোন সুবিধা পাবে। এর বেশি হলে মার্জিন লোন সুবিধা পাবে না।
এসইসি‘র এই শর্তের কারণে গত ৮ মাসে এ খাতের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের ইউনিটের দাম ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এখনো বেশির ভাগ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম এনএভি‘র সাড়ে সাত শতাংশের বেশি থাকায় বিনিয়োগকারীরা মার্জিন লোন সুবিধা পাচ্ছে না। ফলে এই ঋণ-সুবিধা বিনিয়োগকারীদের কোনো কাজে আসছে না।
আব্দুল হালিম নামের একজন বিনিয়োগকারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এসইসি পরিকল্পিতভাবে নানা বিধি নিষেধ আরোপ করে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতকে ধ্বংস করে দিয়েছে। গত এক বছর ধরে প্রায় সব খাতের শেয়ারের দাম অতিমূল্যায়িত হলেও ওইসব শেয়ারের ক্ষেত্রে এসইসি নমনীয় আচরণ করছে। বিপরীতে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে নানা বিধি নিষেধ আরোপ করেছে। এতে এ খাতের বিনিয়োগকারীরা গত এক বছরে পুঁজির ৮০ শতাংশ পর্যন্ত হারিয়েছেন। ’
২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবরের আগে বিনিযোগকারীরা অন্য সব কোম্পানির মতোই মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে মার্জিন লোন সুবিধা পেত। কিন্তু গত বছর ২৬ অক্টোবর এসইসি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম অতিমূল্যায়িত হয়ে পড়েছে এই অভিযোগে এ খাতে ইউনিটের বিপরীতে মার্জিন লোন সুবিধা বন্ধ করে দেয়। এতে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বড় ধরনের দরপতন হয়। পরবর্তীতে বিনিয়োগবারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ২০ ডিসেম্বর এসইসি শর্তযুক্ত মার্জিন লোন সুবিধা চালু করে।
শর্তে উল্লেখ করা হয়, এখন থেকে মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বশেষ ঘোষিত ইউনিটপ্রতি সম্পদ মূল্যের সাড়ে ৭ শতাংশ মূল্য পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা মার্জিন লোন সুবিধা পাবেন। এসইসির ওই ঘোষণায় বাজারে ওই সময়ে লেনদেন হওয়া ২০টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৪টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড এ লোন সুবিধার আওতায় পড়ে। বাকি ১৬ টি মিউচ্যুয়াল এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১০৪০ ঘন্টা ৬ জুলাই ২০১০