ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

কিশোরগঞ্জে টাটা’র মিনি-ট্রাক কারখানা, ডিসেম্বরে চুক্তি

জসীম উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১০
কিশোরগঞ্জে টাটা’র মিনি-ট্রাক কারখানা, ডিসেম্বরে চুক্তি

ঢাকা: ভারতের বিখ্যাত মোটর গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টাটা মোটরস বাংলাদেশে একটি মিনি ট্রাক তৈরির কারখানা স্থাপন করবে। এ সংক্রান্ত পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে।

বাংলাদেশের নিটল-নিলয় গ্রুপ ও টাটা’র যৌথ মালিকানায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় এ কারখানা স্থাপন করা হবে।

ডিসেম্বরেই নিটল-নিলয় গ্রুপ ও টাটা’র মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।

সূত্র জানায়, এ উদ্যোগে প্রায় আটশ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। কারখানা স্থাপনে উভয় পক্ষই বিনিয়োগ করবে। এ বিনিয়োগের অনুপাত ৫০ ঃ ৫০ অথবা ৬০ ঃ ৪০ হতে পারে।
 
চুক্তি স্বাক্ষরের দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে কারখানাটি পুরোদমে উৎপাদনে যেতে পারবে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন নিটল মোটরসের মূল প্রতিষ্ঠান নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমদ।

তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত কারখানা থেকে বছরে ৫০ হাজার গাড়ি নির্মাণ সম্ভব হবে। বাংলাদেশের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত গাড়ি রপ্তানি করা হবে। ’

আবদুল মাতলুব আহমদ বলেন, ‘এসব গাড়ির পার্টস বা যন্ত্রাংশ, বডিসহ সব কিছুই বাংলাদেশে নির্মাণ করা হবে। ফলে এগুলো ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ বা বাংলাদেশে নির্মিত বলেই বিদেশে পরিচিতি পাবে। ’

মূল কারখানাকে ঘিরে ওই এলাকায় সংশ্লিষ্ট আরো অনেক কারখানা প্রতিষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি।  

এলডিসিভুক্ত দেশ হিসাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষত ইউরোপে বাংলাদেশি পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়। ফলে বাংলাদেশে নির্মিতব্য এসব গাড়ি সহজে ওই সব দেশের বাজারে প্রবেশ করতে পারবে।

বাংলাদেশের বিরাট বাজারের পাশাপাশি বিশ্ববাজারে প্রবেশের এই সুবিধা নিতেই টাটা কারখানাটি স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে বলেও জানান মাতলুব আহমেদ।  

বাংলাদেশেও এখন বড় ও ভারি ট্রাকের পাশাপাশি হালকা ট্রাকের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত কারখানাটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে নিটল মোটরস আশা করছে।

বর্তমানে নিটল-নিলয় গ্রুপ ও টাটা’র যৌথ মালিকানায় নিটা কোম্পানি নামে যশোরে একটি বাস ও ট্রাক সংযোজন কারখানা রয়েছে। কিশোরগঞ্জের কারখানাটিও নিটা কোম্পানির অধীনে হবে।

নিটল-নিলয় গ্রুপ সুত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২৫ হাজার বাণিজ্যিক মোটরগাড়ি বিক্রি হয়। আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে এ চাহিদা তিনগুণ বাড়বে। ক্রমবর্ধমান এ চাহিদা মাথায় রেখেই বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনে উভয় পক্ষ এগিয়ে এসেছে।

কারখানা স্থাপনের কাজ কোন পর্যায়ে আছে জানতে চাইলে মাতলুব আহমেদ বলেন, ‘কারখানা স্থাপনের খুঁটিনাটি বিষয়ে সমীক্ষার কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সমীক্ষার কাজ শেষ হলে তা টাটা’র পরিচালনা বোর্ডে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। ’

সমীক্ষাতে বাংলাদেশে মিনি ট্রাকের চাহিদা, বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনা, কারখানা’র প্রস্তাবিত স্থানের সুযোগ সুবিধা, রাস্তাঘাটসহ যোগাযোগ অবকাঠামোর মত বিষয়গুলো স্থান পাচ্ছে।

বোর্ডের অনুমোদনের পর ডিসেম্বরে টাটা’র উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য বাংলাদেশে আসবে বলে আবদুল মাতলুব আহমদ জানান।

সূত্র জানায়, বার্ষিক ৫০ হাজার গাড়ি নির্মাণেরলক্ষ্যমাত্রা ধরা  হলেও উৎপাদনের প্রথম বছর উৎপাদিত গাড়ির সংখ্যা ১৫ হাজারে সীমিত থাকবে।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৭১০ ঘন্টা, ৩০ নভেম্বর, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।