ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ পৌষ ১৪৩১, ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০২ রজব ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কেটে গেছে সব শঙ্কা, বিকেএমইএ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

প্লাবন রাজু, নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১০
কেটে গেছে সব শঙ্কা, বিকেএমইএ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

নারায়ণগঞ্জ: রোববার অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাচন। নির্বাচনে ভোটার হওয়া নিয়ে একপরে অভিযোগ, ভোটার করা ও ভোটের সংখ্যা নিয়ে দু’টি মামলা, নির্বাচন পেছানোসহ নানা কারণে বিকেএমইএ’র নির্বাচন তৈরি পোশাক শিল্প মালিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি আলোচিত বিষয়।

অন্যদিকে নিটওয়্যার গার্মেন্ট কারখানাগুলোর বেশিরভাগই নারায়ণগঞ্জে হওয়ায় এ নির্বাচন নিয়ে নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী ছাড়াও সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।  

নারায়ণগঞ্জ কাব ও ঢাকার বেইলি রোডে অফিসার্স কাবে সকাল ৯ টায় শুরু হয়ে ভোট গ্রহণ বিকেল ৪ টা পর্যন্ত চলবে।

নিট গার্মেন্ট ব্যবসায়ীদের এ সংগঠনের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৫১১ জন। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলায় ভোটার সংখ্যা ৩৩২ জন। এছাড়ার ঢাকা, চট্রগ্রাম, সাভার, গাজীপুর মিলিয়ে ভোটার সংখ্যা ১৭৯ জন। ভোটাররা ভোট দিয়ে মোট সাতাশ জন পরিচালক নির্বাচন করবেন। পরে পরিচালকরা ভোট দিয়ে একজন সভাপতি ও চারজন সহ-সভাপতি নির্বাচন করবেন। মূল নির্বাচনের দু’দিন পরে আগামী ১৩ জুলাই কর্মকর্তা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বিকেএমইএ’র সচিব সুলভ চৌধুরী শনিবার বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে এসব তথ্য জানান।
 
বিকেএমইএ সূত্র জানায়, সংগঠনটির বর্তমান কমিটি ২০০৮ এর ১৬ এপ্রিল দায়িত্ব নেয়। ২০১০ এর একই সময়ে বিকেএমইএ’র আগের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। বিকেএমইএ’র মোহাম্মদ হাতেম গ্র“প নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন দেয়া হচ্ছে না বলে বর্তমান সভাপতি ফজলুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে শুরু করে। এর মধ্যে ২৬ জুন নির্বাচনের একটি তারিখ ঘোষণা করা হয়। বিকেএমইএ’র মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় ছিলো গত ২৫ মে।

এদিকে, এবিসি নিট ডাইং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস এর মালিক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী তাকে বিকেএমইএ নির্বাচনে ভোটার না করায় ২০০৮ এর ৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২৬ মে তাকে নির্বাচনে ভোটার করার আদেশ দেন। তখনও একবার তাকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার কারণে নির্বাচন পেছানোর সম্ভাবনা দেখা দেয়। পরে অবশ্য নির্বাচন পেছায়নি।

২১ জুন বিকেএমইএ’র ভোটার আজিজুল হক নির্বাচনে ভোটের সংখ্যার বিষয়ে এফবিসিসিআই এর সালিশি আদালতে (আর্বিট্রেশন ট্রাইব্যুনাল) একটি মামলা করেন। বিকেএমইএ’র আগের নিয়ম মাফিক নির্বাচনে সাতাশ ভোটের মধ্যে সাতাশটি-ই প্রদান করতে হবে ভোটারকে। কিন্তু আজিজুল হক বিকেএমইএ’র নির্বাচনে ভোটারদের সাতাশটি ভোটের বদলে এক থেকে শুরু করে সাতাশ পর্যন্ত যতগুলি ইচ্ছা ততগুলি ভোট দেওয়ার আদেশ চান।

সালিশি আদালত তার এ আবেদন মঞ্জুর করলে বিকেএমইএ’র নির্বাচন নিয়ে নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়। নতুন আদেশ অনুযায়ী ব্যালট পেপার তৈরি করতে নির্বাচন পিছিয়ে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১১ জুন। কিন্তু সালিশি আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে গত ৩০ জুন হাইকোর্টে রিট করা হলে হাইকোর্ট এ আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। এসময় বিকেএমইএ’র নির্বাচন মামলা-জটিলতায় আটকে যেতে পারে বলে ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়। পরে আবার হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার জজের কাছে আবেদন করা হলে চেম্বার জজ আগের আদেশ বাতিল করে দেন। ফলে রোববারের নির্বাচনে বিকেএমইএ’র ভোটাররা এক থেকে সাতাশের মধ্যে যেকোনো সংখ্যক ভোট দিতে পারবেন।
    
নির্ধারিত সময়ে সেলিম ওসমানের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত নিট পরিষদের ২৭ জনের প্যানেল ও এর বাইরে ১৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। পরে ১৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী এক হয়ে এম এ সবুরের নেতৃত্বে প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স গঠন করেন।
   
এবারের নির্বাচনে সেলিম ওসমানের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত নিট পরিষদের প্যানেলে প্রার্থী হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান, হাবিবুর রহমান, আবু আহম্মেদ সিদ্দিক, মোহাম্মদ হাতেম, শামীম আহম্মেদ, খাজা আজিজুল হক টুলু, মনসুর আহম্মেদ, আসলাম সানি, এস এম সালাউদ্দিন, শফিকুজ্জামান প্রিন্স, মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী, শাহজাহান আলম, মঞ্জুরুল হক, নুরুল আলম চৌধুরী, গোলাম জাকারিয়া ভূঁইয়া, হুমায়ুন কবির খান, সৈয়দ হোসেন সরকার, খন্দকার মোফাজ্জ্বল উদ্দিন মনির, শ্যামল কুমার সাহা, ফারুক বিন ইউসুফ পাপ্পু, আনোয়ার কামাল পাশা, আলমগীর কবির, শারাফাত জামিল, মহিউদ্দিন ফারুকী, এফএম কবির মঈন, এস এম কামরুল আহসান ও গওহর জামিল সিরাজ।

প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স এর প্রার্থীরা হচ্ছেন এম এ সবুর, শেখ ফখরুদ্দিন আলি আহম্মেদ, খাজা রহত উলাহ, নুসরাত বারি আশা, সৈয়দ আবু ইউসুফ আব্দুলাহ, শেখ আব্দুস সালাম, এ এস এম শামসুজ্জামান, নুরুল হাসান, আবুল কালাম আজাদ, মজিবুর রহমান মজুমদার, হাজী আব্দুল মজিদ মন্ডল, আব্দুল মঈন, জুলফিকার আলি শিকদার, শেখ মনোয়ার হোসেন, আব্দুস সালাম সরকার, জহিরুল ইসলাম ও মাহবুবুর রহমান।    

বাংলাদেশ সময় ০৯০০ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।