ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘এত বিশাল! এতো দেখছি জায়ান্ট ইন্ডাস্ট্রি!

জাহিদুর রহমান ও সৈয়দ হাসিব | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৫
‘এত বিশাল! এতো দেখছি জায়ান্ট ইন্ডাস্ট্রি! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চন্দ্রা,কালিয়াকৈর (গাজীপুর) থেকে ফিরে: ‘এত বিশাল!এতো দেখছি জায়ান্ট ইন্ডাস্ট্রি! সামনের সড়ক দিয়ে এত যাওয়া আসা করেছি,কখনো ভাবনাতেই আসেনি এর বিস্তৃতি এত বিশাল’-এভাবেই ‘আমাদের পণ্যের’ কারখানা পরিদর্শন করে নিজের অভিব্যক্তি জানালেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।

বৃহস্পতিবার মধ্যাহ্ন থেকে পড়ন্ত বিকেলটা তিনি কাটিয়ে দিলেন গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর জেলার চন্দ্রায়।



সেখানে দেখা গেলো, দেশের হাইটেক ইন্ডাস্ট্রির বিশালতা দেখে পলকই যেন ছিলেন ‘অপলক’ দৃষ্টিতে।

ভিন্ন এক মুগ্ধতা নিয়ে দেখলেন ‘আমাদের পণ্যের সমার্থক ওয়ালটনের বিস্তৃতি আর আরো এগিয়ে যাবার বিশাল আয়োজন।

নিজের মুখেই বললেন, ওয়ালটন এখন জাতীয় গর্বে পরিণত হয়েছে। দক্ষতা, যোগ্যতা এবং সেবা দিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এই শিল্প।

বাংলাদেশের দূত হয়ে আজ বিভিন্ন দেশের ঘরে ঘরে ওয়ালটন।

অনেকেই দক্ষিণ কোরিয়াকে চেনেন না। কিন্তু স্যামসাংকে চেনেন। আসলে অনেকের কাছে দক্ষিণ কোরিয়া মানেই তো স্যামসাং,ঠিক তেমনি ওয়ালটন। বাংলাদেশের মানুষের সামনে  প্রতিষ্ঠানটি সাফল্যের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা আইসিটি খাতের বিনিয়োগকারীদের উদ্বুদ্ধ করবে। সরকারি নীতিমালার আওতায় ওয়ালটনকে বেসরকারি হাইটেক পার্ক ঘোষণার জন্যে সম্ভব সব কিছুই করবো’- আশ্বাস দেন তিনি।

দুপুরে ওয়ালটন ফ্যাক্টরি কমপ্লেক্স পরিদর্শন শেষে ওয়ালটনের নব-নির্মিত ই-কমার্স ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করেন পলক। জানাতে ভুললেন না, এই অগ্রযাত্রায় কিন্তু সরকার অংশীদার। শিল্প বিকাশে সরকারের উদার নীতির প্রমাণই তো দিচ্ছে ওয়ালটনের এই অগ্রযাত্রা।

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ওয়ালটন কারখানায় পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান ওয়ালটন গ্রুপের পরিচালক রেজাউল আলম শামীম। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর প্রশাসক এস এম আলম, ওয়ালটনের পরিচালক মঞ্জুরুল ইসলাম অভি, নির্বাহী পরিচালক আবুল বাশার হাওলাদার, অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম, লে. কর্ণেল (অব.) আব্দুল কাদের, কর্নেল (অব.) এসএম শাহাদাত আলম প্রমুখ।

একটি ব্যাটারি চালিত সুসজ্জিত গাড়িতে করে গোটা কারখানা ঘুরে দেখেন প্রতিমন্ত্রী। একটি কারখানা থেকে নানা পথ ঘুরে অন্য কারখানায়। সেখান থেকে সিঁড়ি কিংবা লিফটে করে এক ইউনিট থেকে আরেক ইউনিটে। এভাবে অতিথিদের অনেকেই হারিয়ে ফেলেন পূর্ব -পশ্চিম।

‘আসলে এত বিশাল কারখানা,কখন যে আরেক ইউনিটের দোরগোড়ায় উপস্থিত হয়ে খেই হারিয়ে ফেলছি তাই বুঝিতে পারছি না’- খোদ গণমাধ্যম কর্মীদের মুখ থেকেই ভেসে আসতে থাকে এমন অনেক কথা।

বিকেলে কারখানার মিলনায়তনে তুলে ধরা হয় ওয়ালটন হাইটেক পার্কের কার্যক্রম। বলা হয়, বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, মেশিনারিজ এবং অত্যন্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে উন্নতমানের ফ্রিজ, মোটরসাইকেল, এয়ারকন্ডিশনারসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী উৎপাদন করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।

এছাড়া ওয়ালটন মাইক্রোটেক করপোরেশনে তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের টেলিভিশন ও অন্যান্য হোম এ্যাপ্লায়েন্স। প্রযুক্তি নির্ভর এসব পণ্য দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওয়ালটন ব্র্যান্ড সারা বিশ্বে একটি নজির সৃষ্টি করেছে। এই ব্র্যান্ডকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে যাতে ওয়ালটনের সাফল্যের গল্প নিয়ে সারা বিশ্ব গবেষণা করে। তিনি বলেন, ওয়ালটন হাইটেকে এখন ১৫ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

২০২১ সালের মধ্যে ওয়ালটন হাইটেক পার্কে ১ লাখ তরুণ তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সক্ষমতা সৃষ্টিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও সরকারী নীতি সহায়তার আশ্বাস দেন প্রতিমন্ত্রী।

ই-কমার্স সাইট প্রসঙ্গে ওয়ালটনের আইটি বিভাগের সিনিয়র অতিরিক্ত পরিচালক আরিফুল আম্বিয়া বাংলানিউজকে জানান, অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে ওয়ালটন। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে বিশ্বমানের পণ্য তৈরি করার মাধ্যমে ইতোমধ্যে ওয়ালটন ক্রেতাদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। ক্রেতারা যাতে ঘরে বসে আরো সহজে ওয়ালটন পণ্য ক্রয় করতে পারেন সেই উদ্দেশ্যে ই-কমার্স সাইটটি ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণাকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেবে।

এই ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমে এখন থেকে ক্রেতারা ঘরে বসে বাংলাদেশের যেকোন প্রান্ত থেকে অন-লাইনের মাধ্যমে ওয়ালটনের যেকোনো পণ্য ক্রয় করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে ক্রেতাদেরকে হোম ডেলিভারি সেবাও প্রদান করা হবে বলে জানান আম্বিয়া। তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতে ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমে ওয়ালটন পণ্য ক্রয়ের উপর বিশেষ ছাড় প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে ওয়ালটনের।

আগ্রহী ক্রেতারা ওয়ালটনবিডি.কম ওয়েব সাইটে গিয়ে ই-কমার্স সেবার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির যেকোনো ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল, অটোমোবাইল, হোম ও কিচেন এ্যাপ্লায়েন্সেস সহজেই কিনতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৫
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।