ঢাকা: ২০১৫ সালে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০৬ শতাংশ বেশি মুনাফা অর্জন করেছে জনতা ব্যাংক লিমিটেড। গত বছর ব্যাংকটি ৫ হাজার ২৬১ কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠন করেছে।
বুধবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে ব্যাংকের ‘বার্ষিক সম্মেলন-২০১৬’ অনুষ্ঠানে ব্যাংকের সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুস সালাম এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, শুধু মুনাফা অর্জনই নয়, আর্থ সামাজিক উন্নয়নেও আমাদের দায়িত্ব বেশি। রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক হয়েও আমরা বহুমাত্রিক ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরো জানান, ২০১৫ সালে ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ১শ’ কোটি টাকার বিপরীতে আমরা ১ হাজার ১৬২ কোটি টাকা অর্জন করেছি। যা লক্ষ্যমাত্রার ১০৬ শতাংশ বেশি। ৩৪টি কোম্পানির ঋণ প্রায় ৫ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী ঋণ পুনর্গঠন করা হয়েছে।
এ থেকে সুদ আয় প্রায় ৪শ’ কোটি টাকা নেওয়া সম্ভব হয়নি। হলে মুনাফা ১ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতো। এজন্য তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানান।
বর্তমানে ব্যাংকে কোনো মূলধন ঘাটতি ও কোনো প্রভিশন নেই। ২০১৬ সালে মুনাফা লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা অর্জন করাও সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
২০১৪ সালে লোকসানি শাখা ৬০টি থাকলেও ২০১৫ সালে তা কমে ৩৪টিতে নেমে এসেছে। চলতি বছরের জুনের মধ্যে সব শাখা অনলাইনে চলে আসবে বলেও জানান তিনি।
ঋণ হার ৮.১৫ শতাংশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়াত্ত অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় এ ব্যাংকের ঋণ হার সিঙ্গেল ডিজিট (৮.১৫ শতাংশ) নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কেপিআই (কি পারফরমেন্স ইন্ডিকেটর) এর ১৩টি সূচকের মধ্যে জনতা ব্যাংক ১২টি সূচক অর্জন করেছে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি, বেসিক ব্যাংকে লুটের চেষ্টা হলেও জনতা উত্তম রেকর্ডের অধিকারী হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে একমাত্র জনতার মূলধন ঘাটতি নিজেরাই সমাধান করেছে। সেজন্য তিনি জনতার পরিচালনা পর্ষদ ও ক্লায়েন্টদের ধন্যবাদ জানান।
সূচকে এগিয়ে থাকায় জনতা ব্যাংককে কৃতিত্বের জন্য ধন্যবাদ জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশে ৯ হাজার ব্যাংক ব্র্যাঞ্চের মধ্যে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকের প্রায় ১০ শতাংশ।
৫৬টি ব্যাংক হলেও ব্যাংকিং সেবা সেভাবে মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে পারিনি। আরো অগ্রগতির সম্ভবনা রয়েছে, সেদিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
জনতা ব্যাংকে সুদ হার কম হওয়া সত্ত্বেও লক্ষ্যমাত্রার অধিক পরিমাণ মুনাফা অর্জন করায় এ ব্যাংকের প্রশংসা করেন অর্থমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ব্যাংকের চেয়ারম্যান শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সচিব ড. এম আসলাম আলম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৬
আরইউ/জেডএস