ভোলা: এবার ভোলার বিভিন্ন এলাকায় আলুর আবাদ অন্য বছরের চেয়ে ভালো হলেও কপালে চিন্তার ভাঁজ চাষিদের।
আলু খেতে রোগ ও পোকার আক্রমণের কারণে অনেকটাই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভোলার আলু চাষিরা।
বেশিরভাগ চাষিরা জানান, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সার, ওষুধ ও কীটনাশক প্রয়োগে করে বিপর্যয় কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছেন তারা। কিন্তু খেত পরিদর্শনে কিংবা এ সমস্যা থেকে উত্তরণে কোনো কৃষি কর্মকর্তার সহায়তা পাচ্ছেন না তারা।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গত বছর জেলার ৫ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়। এবার আবাদ হয়েছে মোট ৮ হাজার ৬০৫ হেক্টর জমিতে।
চাষিরা জানান, আবাদের শুরুতে মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও এখন রোগ ও পোকার আক্রমণ দেখা দেওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তারা। কেউ কেউ ফলন বির্পয়ের শঙ্কায় রয়েছেন।
এমনকি, সার, ওষুধ ও কীটনাশক প্রয়োগ করেও কাঙ্ক্ষিত ফল মিলছে না বলে অভিযোগ কারো কারো।
ইলিশা এলাকার আলু চাষি জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর কিছুটা লাভ হয়েছে। এ মৌসুমে ৮০ হাজার টাকা খরচ করে ১০ গণ্ডা জমিতে আলু চাষ করেছি, কিন্তু ক্ষেতে পাতা মোড়ানো রোগ দেখা দিয়েছে।
অপর চাষি সামসুদ্দিন জানান, গেল বছর আলু চাষ করে ২৫ হাজার টাকার লাভ হয়েছে। এ মৌসুমে নিজের পুঁজি ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সাড়ে ৯ গণ্ডা জমিতে আলু চাষ করেছি। কিন্তু ক্ষেতের অবস্থা ভালো নেই, তাই ফলন খুব খারাপ হবে।
চাষি মিরাজ হোসেন বলেন, ২৫ গণ্ডা জমিতে এখ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে আলু চাষ করে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি, ক্ষেতের এক তৃতীয়াংশ পোকা ও রোগের আক্রমণে নষ্ট হয়ে গেছে।
ইলিশা ইউনিয়নের চর আনন্দ গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, আলু খেতের পরিচর্যা, আগাছা দমনের কাজে ব্যস্ত চাষিরা। কেউ কেউ আবার ওষুধ প্রয়োগ করছেন।
কথা হয় স্থানীয় চাষি সিরাজ মিস্ত্রি, জাহের, জাকির, ফারুক, মোজাম্মেলের সঙ্গে। তারা জানান, কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা খেত পরিদর্শনে না আসায় তারা সঠিক পরামর্শ পাচ্ছেন না। মাঝে-মধ্যে এলেও তাদের চাষিরা পাচ্ছেন না। তাই বাধ্য হয়ে পোকা ও রোগ দমনে নিজেরাই ওষুধ ও কীটনাশক প্রয়োগ করছেন।
তারা জানান, গত বছর আলু চাষে লাভবান হয়েই এ মৌসুমে ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আলুর আবাদ করেছেন। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই ক্ষেতের এমন অবস্থায় উৎপান খরচ উঠবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কিত তারা।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে, ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রশান্ত কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, গত বছরের তুলনায় জেলায় এ বছর প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আলুর আবাদ হচ্ছে। তবে যদি পোকা বা রোগের আক্রমণ থাকে তাহলে উপসহকারী কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক খেত পরিদর্শনের দায়িত্বে রয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করা যাচ্ছে বাম্পার ফলন হওয়ার পাশাপাশি এ মৌসুমে প্রায় ২ লাখ মেট্রিন টন আলু উৎপাদন হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৬
এসআর/