ঢাকা: আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আস্থা হারিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী ব্যাংক। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব এ ব্যাংকটির মাধ্যমে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য এবং রেমিটেন্স আসা কমে গেছে।
রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সোনালী ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ব্যাংকটির আর্থিক সূচকগুলো কর্মকর্তাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়, যা গোপন রাখার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ২০১৫ সালে ব্যাংকের মাধ্যমে ২০ হাজার ৫৯ কোটি টাকার আমদানি-বাণিজ্য হয়েছে। ২০১৪ সালে যা ছিল ৩০ হাজার ১৪ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মাধ্যমে আমদানি বাণিজ্য কমেছে ৯ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা বা ৩৩ দশমিক ১৬ শতাংশ।
ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানি বাণিজ্য সাড়ে ২৮ শতাংশ কমে হয়েছে ৪ হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা। ২০১৪ সালে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানি বাণিজ্য হয় ৬ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা।
এছাড়া ব্যাংকটির প্রতি আস্থা হারিয়েছে বিদেশে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এই ব্যাংকের মাধ্যমে ২০১৫ সালে রেমিটেন্স এসেছে ১২ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা। ২০১৪ সালের তুলনায় যা ২৮৬ কোটি টাকা কম। ওই বছর এ ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স আসে ১২ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা।
প্রধান প্রধান আর্থিক সূচক চিত্রে দেখা যায়, ২০১৫ সালে সোনালী ব্যাংক আমানত সংগ্রহ করেছে ৮৭ হাজার ৫০১ কোটি টাকার। আর ঋণ ও অগ্রিম আদায় হয়েছে ৩৪ হাজার ৬০২ কোটি টাকা, বিনিয়োগ হয়েছে ৪৩ হাজার ১ কোটি টাকা।
অন্যদিকে খেলাপি ঋণ ৫২৭ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। কমেছে আদায়ও। খেলাপি ঋণ থেকে ২০১৫ সালে আদায় হয়েছে ১ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। ২০১৪ সালে এ থেকে আদায় হয়েছিল ২ হাজার ৭২৬ কোটি টাকা।
এছাড়া শীর্ষ ২০ খেলাপি থেকেও ২০১৫ সালে আদায় ৮০৬ কোটি টাকা কমে হয়েছে ১ হাজার ১১৪ কোটি টাকা। ২০১৪ সালে শীর্ষ খেলাপি থেকে আদায় হয় ১ হাজার ৯২০ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রদীপ কুমার দত্ত সোমবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে তার অফিসে গিয়ে কথা বলতে বলেন।
রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে (আইডিইবি) অনুষ্ঠিত ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলম, চেয়ারম্যান ফজলে কবির, পরিচালক একেএম রেজাউর রহমান, মো. মুসলিম চৌধুরী, মো. ফজলুল হক, সাবেরা আক্তারী জামাল, আফজাল হোসেন ও এমডি প্রদীপ কুমার দত্ত উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে ২০১৬ সালকে ‘গুণগত ঋণ বৃদ্ধি ও আদায়ের বছর’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৬
এসই/আরএইচ/জেডএম