ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিদেশি রসুনের দাম আকাশছোঁয়া, বাড়তি ব্রয়লারের দাম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৬
বিদেশি রসুনের দাম আকাশছোঁয়া, বাড়তি ব্রয়লারের দাম ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: প্রায় দুই মাস ধরে সপ্তাহ ব্যবধানে লাফিয়ে বাড়ছে রসুনের দাম। একইসঙ্গে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল (খোলা), ফার্মের মুরগি (লেয়ার)।



শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজারে সরেজমিনে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়‍া গেছে।

তবে রাজধানীর খুচরা বাজারে অপরিবর্তিত দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ, আলু ও ব্রয়লার মুরগি।

ক্রেতারা বলছেন, সপ্তাহ ব্যবধানে এভাবে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের বেশ বিপাকে পড়তে হচ্ছে। আর দাম বেড়ে গিয়ে অপরিবর্তিত থাকে, এ কারণে অন্য খাতে খরচের হার কমিয়ে নিত্যপণ্যের বাজারে বাড়তি খরচ যোগ করতে হচ্ছে।

রাজধানীর বসুন্ধরা, রামপুরা, মুগদা, মালিবাগ কাঁচাবাজারের বিক্রেতারা জানান, বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রায় দুই মাস ধরে ঊর্ধ্বমুখী রসুনের দাম। দুই মাস আগে দেশি রসুনের দাম ছিলো প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১১০ টাকা। টানা দুই সপ্তাহ ধরে বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। তবে এ সপ্তাহে বাজারে নতুন রসুন আসায় প্রতিকেজিতে দাম কমেছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

আর আমদানি করা রসুন খুচরা বাজারভেদে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশি রসুন কাঁচা, তাই বিক্রি কম হচ্ছে। যে কারণে দাম কিছুটা কম। তবে আমদানি করা রসুনের দাম আরও এক ধাপ বেড়ে গেছে।

আমদানি করা রসুনের দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতারা বলেন, বিদেশের বাজারে রসুনের দাম বাড়তি। বেশি দাম দিয়ে কিনে আনতে হয়, আমরাও বেশি দামে বিক্রি করছি।

‘থেমে থেমে বাড়তি দাম কেন?’ এমন প্রশ্নের উত্তরে কারওয়ান বাজারের আড়‍ৎদার মো. সবুজ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, দেশের ব্যবসায়ীরা ট্যাক্সের ভয়ে আছে। কখন কোন জিনিসে সরকার ট্যাক্স বাড়ায় তা কেউ বলতে পারে না। ব্যবসায়িক লোকসানে আছি। তাই এভাবে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।

‘বাজারে দেশি রসুন আসতে শুরু করেছে। তাই আমদানি করা রসুনের দাম আগামী সপ্তাহ থেকে কমতে পারে,’ বলেন তিনি।

এদিকে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজধানীর এসব বাজারে পাঁচ টাকা কমানো হয় সয়াবিন তেলের দাম। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত গত সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকলেও, এ সপ্তাহে সয়াবিনের কেজিতে তিন টাকা দাম বেড়েছে। তবে রাজধানীর বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়েনি।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, সয়াবিন তেল (খোলা) প্রতি ড্রামে ৬০০ টাকা বেড়ে গেছে। এক ড্রামে ১৮৬ কেজি বা ২০৪ লিটার তেল থাকে।

রাজধানীর হাতিরপুল, বসুন্ধরা শান্তিনগর কাঁচাবাজারে খোলা সয়াবিন তেল প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯২ টাকায়; যা গত সপ্তাহে ৮৬ থেকে ৮৮ টাকা ছিল।

সয়াবিন সুপার সিটি ৬৮ থেকে ৭২ টাকা লিটার, খোলা পাম অয়েল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা লিটার, এবং পাম (সুপার) অয়েল ৬৬ থেকে ৭২ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা বেঙ্গল অয়েল স্টোরের ম্যানেজার মো. মহিউদ্দিন বলেন, মৌলভীবাজারের মিল মালিকরা তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তারা ছাড়া আর কেউ বলতে পারবে না তেলের দাম বাড়ার কারণ।

এদিকে রাজধানীর এসব বাজারে অপরিবর্তিত দামে বিক্রি হচ্ছে আলু ও পেঁয়াজ। আলু প্রতিকেজি ১৫ থেকে ১৮ টাকা, পেঁয়াজ প্রতিকেজি ২৮ থেকে ৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

শান্তিনগর কাঁচা বাজারের বিক্রেতা আবদুল আলী জানান, অপরিবর্তিত দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৪৫ থেকে ১৬০ টাকায়। তবে সপ্তাহ ব্যবধানে দাম বেড়েছে লেয়ার মুরগির দাম।

এ সপ্তাহে প্রতিকেজি লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা।

দেশি মুরগি (পিস) ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, কেজি ৩০০ টাকা। পাকিস্তানি মুরগি (পিস) ১৮০ থেকে ২২০ টাকা এবং কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা দরে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, সপ্তাহের অন্য দিনে ফার্মের মুরগির ডিমের হালি ৩২ থেকে ৩৩ টাকা বিক্রি হলেও, ছুটির দিন শুক্রবার হালি প্রতি এক বা দুই টাকা বেড়ে যায়।

বাজার ও ডিমের আকারভেদে রাজধানীর বাজারে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতিহালি ৩৪ থেকে ৩৬ টাকায়, ডজন ১০০ টাকা। দেশি মুরগির ডিম হালি ৪৫ টাকা, ডজন ১৩৫ টাকা। হাঁসের ডিমের হালি ৪৬ টাকা, ডজন ১৩৫ টাকা।

ফুলকপি, বাঁধাকপি প্রতিপিস ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। দাম কমে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজিতে।

দাম কমেছে কাঁচামরিচ, ধনেপাতা ও শালগমের। কাঁচামরিচ কেজিপ্রতি ৪০ টাকা, ধনেপাতা ৪০ টাকা কেজি, শালগম ২০ টাকা, বেগুন জাতভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিম প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।

‘দেশে ১২ মাস সব সবজির চাষ হয়, যে কারণে সবজির দাম খুব বেশি বাড়বে না,’ জানালেন রামপুরা ও মুগদা বাজারের একাধিক সবজি বিক্রেতা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫২ ‍ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৬
এফবি/এমএ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।