চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে টানা পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার থেকে পাথর আমদানি কার্যক্রম ফের শুরু হয়েছে। তবে পাঁচদিন বন্ধ থাকায় প্রায় ৫ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া, ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের দাবি ভারতীয় রফতানিকারকরা পুরোপুরি বাস্তবায়ন না করলে আবারো পাথর আমদানি বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সোনামসজিদ কাস্টমস ও বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুক্রবার সারাদিন স্বাভাবিকভাবে এ বন্দর দিয়ে পাথর আমদানি হয়েছে। বন্দরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৯৭টি পাথরবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে।
বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় বাংলাদেশের ওপারে ভারতের মহদীপুর স্থলবন্দরে প্রায় দেড় হাজার পাথরবাহী ট্রাক অপেক্ষা করছে। অপেক্ষামাণ ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করতেই এক সপ্তাহের বেশি সময় লেগে যাবে বলে মহদীপুর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ভূপতি মণ্ডল জানিয়েছেন।
টানা পাঁচদিন পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় এ বন্দরে রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার সাঈদ আহমেদ রুবেল বাংলানিউজকে জানান, এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ পাথরবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তাই শুধু পাথর থেকেই প্রতিদিন রাজস্ব আদায় হয় প্রায় ১ কোটি টাকা। সে হিসেবে পাঁচদিন বন্ধ থাকায় বন্দরের ৫ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, অন্যান্য পণ্য আমদানি স্বাভাবিক থাকায় রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রায় কোনো ঘাটতি হবে না। বরং ভারতের সঙ্গে ভাল যোগাযোগ ও দূরত্ব কম হওয়ায় এ বন্দরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়ে থাকে।
বন্দরের পাথর বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক সাহাবুদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার তুলনামূলক ভাল মানের পাথর দিয়েছে ভারত। বেশির ভাগ ট্রাকে আগের মতো ধুলা-বালি, মাটি বা ব্যবহার অনুপযোগী পাথর ছিল না। তবে আগেই লোড করা কিছু ট্রাকে আগের মতোই ধুলা-বালি ও মাটি মিশ্রিত পাথর এসেছে।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি কাবিরুল ইসলাম খোকন বাংলানিউজকে জানান, ভারতীয় রফতানিকারকরা বাংলাদেশি আমদানিকারকদের দাবি নীতিগতভাবে মেনে নেওয়ার আশ্বাসের পর বৃহস্পতিবার থেকে পাথর আমদানি শুরু হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই পাথর আমদানি করা হবে। এর মধ্যে ভারতীয় অংশে মোহদীপুর বন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা লোড হওয়া পাথরবাহী ট্রাকগুলো ছাড় দেওয়া হবে।
২০ ফেব্রুয়ারি ২ দেশের ব্যবসায়ীদের নিয়ে ভারতীয় মোহদীপুর স্থলবন্দরে পর্যালোচনা সভা এবং উভয় দেশের পণ্যবাহী ট্রাক ওজনমাপক যন্ত্র ও ওয়েব্রিজগুলোর ওজন পর্যালোচনা করা হবে। তাই ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের দাবি পুরোপুরিভাবে মেনে না নেওয়া হলে আবারো পাথর আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সম্প্রতি ভারত থেকে নিম্নমানের পাথর আসা ও মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমদানিকারকরা ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধের ঘোষণা দেয়। ধুলা-বালি ও মাটিসহ ব্যবহার অনুপযোগী পাথর পাঠানো যাবে না, যখন তখন পাথরের মূল্য বৃদ্ধি করা যাবে না এবং পাথরের রফতানি মূল্য পুনঃনির্ধারণ করতে হবে-এসব দাবিতে পাথর আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৬
এমজেড