ঢাকা: এটিএম বুথে বিশেষ যন্ত্র বসিয়ে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির পর নকল কার্ড তৈরি করে অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায় ইস্টার্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারাই জড়িত বলে মত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এটিএম লেনদেন নিরাপদ রাখা ও ঝুঁকি মোকাবেলা প্রসঙ্গে রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, পেমেন্ট সিস্টেমস’র মাধ্যমে লেনদেন দ্রুত, উন্নততর ও সহজীকরণের লক্ষ্যে দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলো বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক পেমেন্ট চ্যানেল ব্যবহার করছে। সম্প্রতি এটিএম কার্ডধারী কিছু গ্রাহকের হিসাব থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংকের গোচরীভূত হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ছয়টি এটিএম বুথে স্কাইমিং ডিভাইস এবং ভিডিও ক্যামেরা স্থাপনের সময়ে ওই বুথে ব্যবহত কার্ডের তথ্য ও পিন সংগ্রহ করে নকল কার্ড প্রস্তুত করে জালিয়াতি ঘটানো হয়েছে।
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের একজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার সময় গ্রাহকের পিন চুরি হয়েছে। এটি করা হয়েছে স্কাইমিং ডিভাইস এবং ভিডিও ক্যামেরার মাধ্যমে। ইবিএল’র এটিএম বুথে তো অন্য ব্যাংকের কর্মকর্তা কাজ করতে যান না। নিজেদের কর্মকর্তারাই ভেতরে গিয়ে সবকিছু দেখভাল করেন।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক ব্যাংকার মামুন রশিদ বলেন, এ ঘটনায় শুধু ব্যাংকের কর্মকর্তাই নয়, সাইবার অপরাধীরাও জড়িত থাকতে পারে। এ ধরনের ঘটনা ঘটে সাধারণত ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত লোড দিলে। তাই আগে সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করে ব্যবসা প্রসারিত করা উচিত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো প্রতিরোধ স্কাইমিং ডিভাইস স্থাপন, নিয়মিত ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ এবং এটিএম বুথে কোনভাবেই যাতে কোন ব্যক্তি-ব্যক্তিবর্গ নতুন যন্ত্র স্থাপন-মেরামত করতে না পারে সেজন্য বুথের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং বুথে কর্মরত সিকিউরিটি গার্ড কর্তৃক ব্যাংকের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ফোন করে বুথ মেরামতে আসার সময় ও পরিচয় নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হলো।
নকল এটিএম কার্ড তৈরি করে ইস্টার্ন ব্যাংকের পাশাপাশি আরও কয়েকটি ব্যাংক থেকে গত দুই দিনে কয়েকশ’ গ্রাহকের লাখ লাখ টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ব্যাংকের দায় চিহ্নিত করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নিচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার বাংলানিউজকে বলেন, কোনো ব্যাংক থেকে যদি হঠাৎ করে আমানত উইথড্র হয়ে যায়, এটি অবশ্যই উদ্বেগের কারণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনসাইট পরিদর্শক দল বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে এবং এর সঙ্গে ইবিএল’র যেসব কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি: ১৪, ২০১৬
এসই/জেডএম