ঢাকা: জালিয়াতি রোধে আগামী একমাসের মধ্যে বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের এটিএম বুথে এন্টি স্কিমিং ডিভাইস স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।
সার্কুলারে এটিএম (অটোমেটেড টেলার মেশিন) লেনদেন নিরাপদ ও ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক-প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, সম্প্রতি পরিলক্ষিত হয়েছে যে, কয়েকটি এটিএম বুথে কার্ড স্কিমিং ও পিন কাপচার ডিভাইস স্থাপন করে গ্রাহকের কার্ডের তথ্য ও পিন নম্বর সংগ্রহপূর্বক জালিয়াতির মাধ্যমে এটিএম বুথ থেকে গ্রাহকের টাকা উত্তোলনের ঘটনা ঘটেছে।
এ কারণে নতুনভাবে স্থাপিত এটিএম বুথগুলোতে বাধ্যতামূলক এন্টি স্কিমিং ও পিন শিল্ড ডিভাইস থাকতে হবে। পূর্বে স্থাপিত বিভিন্ন বুথে একমাসের মধ্যে এন্টি স্কিমিং ও পিন শিল্ড ডিভাইস স্থাপন করতে হবে।
প্রতিদিন এটিএম বুথে সংগঠিত লেনদেনের ভিডিও ফুটেজ যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং তাতে কোনো সন্দেহজনক বিষয় দেখা গেলে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ইতোমধ্যে গ্রাহকের কার্ডের তথ্য ও পিন নম্বর কোনোভাবে পাচার হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট সময়ে এটিএম বুথে ব্যবহৃত কার্ডসমূহ চিহ্নিত করে নিজ ব্যাংকের কার্ডসমূহের ক্ষেত্রে গ্রাহককে অবহিত করে কার্ডটি বাতিল এবং শিগগির গ্রাহককে নতুন কার্ড দিতে হবে।
গ্রাহক অন্য ব্যাংকের হলে সংশ্লিষ্ট কার্ড প্রদানকারী ব্যাংককে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করে একই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করতে হবে।
উক্ত ভিডিও ফুটেজ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অবহিতকরণপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করতে হবে।
নিয়মিতভাবে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ব্যাংক কর্তৃক নিজস্ব এটিএম বুথসমূহ নিরীক্ষা করে নিরীক্ষা প্রতিবেদন মাসিক ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অত্র বিভাগে প্রেরণ করতে হবে।
এটিএম বুথে নিয়োজিত গার্ডদের জাল-জালিয়াতি প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
এছাড়া টুপি, সানগ্লাস পরিধানকারী এবং ব্যাগ বহনকারী গ্রাহকদের ক্ষেত্রে গার্ড সতর্ক থাকবে। এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনের সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিভাবে গ্রাহককে মোবাইলে ম্যাসেজ এলার্টের মাধ্যমে লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য প্রেরণ করতে হবে।
চলতি বছরের ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি গ্রাহকের অজ্ঞাতসারে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডসহ (ইবিএল) কয়েকটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে গ্রাহকদের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর এই জালিয়াতির বিষয়টি বেরিয়ে আসে।
তিনটি ব্যাংকের ছয়টি বুথে ‘স্কিমিং ডিভাইস’ বসিয়ে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির পর কার্ড ক্লোন করে টাকা তুলে নেওয়ার তথ্য পাওয়ার কথা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তকারীরা।
এর মধ্যে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করেছে, যাতে গ্রাহকের তথ্য চুরি করে ক্লোন কার্ড বানিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের সঙ্গে বিদেশি যোগসাজশ রয়েছে বলে সন্দেহের কথা জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৪ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি: ১৫, ২০১৬, আপডেট: ২২৫৬ ঘণ্টা
এসই/এমএ