পঞ্চগড়: অনেক জল্পনা-কল্পনা আর প্রতীক্ষা শেষে বাণিজ্য কার্যক্রম শুরুর দেড় যুগ পর আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে চালু হতে যাচ্ছে ইমিগ্রেশন (মানুষ পারাপার) সুবিধা।
এ ইমিগ্রেশন সুবিধা চালু হলে সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধায়।
চতুর্দেশীয় (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান) ব্যবসা বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনাময় কেন্দ্রস্থল বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে এখন চলছে ইমিগ্রেশন উদ্বোধনের নানা আনুষ্ঠানিকতার প্রস্তুতি।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, গত রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইমিগ্রেশন সুবিধা চালুর বিষয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাবান্ধায় ইমিগ্রেশন সুবিধা চালুর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। ওই দিন দুপুর ২টায় বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জেনারেল (অব.) বিজয় কুমার সিং এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা’র ইমিগ্রেশন কার্যক্রম উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত ইমিগ্রেশন সুবিধা চালুর সিদ্ধান্তের খবরে এখন আনন্দে উল্লাসিত পঞ্চগড়বাসী। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট।
১৯৯৭ সালের ১লা সেপ্টেম্বর নেপালের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে ১০ একর জমির উপর জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ভারতীয় সীমান্তঘেঁষে চালু হয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। পরবর্তীতে ২০১১ সালে এ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়।
২০১১ সালের ২২ জানুয়ারি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য কার্যক্রম উদ্বোধনে (বাংলাদেশের পক্ষে কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এবং ভারতের পক্ষে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মূখার্জী) উভয় দেশই ছয় মাসের মধ্যে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট (মানুষ পারাপার) চালু হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এর পর থেকে বিভিন্ন সময় ইমিগ্রেশন চালু হওয়ার কথা হলেও ভারত-বাংলাদেশ দু’দেশের নানা জটিলতার কারণে তা হয়ে ওঠেনি।
আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাবান্ধায় ইমিগ্রেশন চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি মানুষও সহজ প্রক্রিয়ায় চারটি দেশে যাতায়াত করতে পারবেন। এতে পঞ্চগড় জেলা পরিণত হবে পর্যটকদের প্রাণকেন্দ্রে। এছাড়াও বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান ও চীনের মিলন মেলায় পরিণত হবে পঞ্চগড়।
এ স্থলবন্দর ও ইমিগ্রেশন সম্পূর্ণরুপে চালু হলে শুধু তেঁতুলিয়া-পঞ্চগড় নয়, সমগ্র দেশের অর্থনীতিতে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৬
আরএ/