বেনাপোল (যশোর): যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের খুচরা মূল্য বেড়ে আমদানি মূল্যের প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১২ টাকা দরে আমদানি করা পেঁয়াজের মূল্য বেড়ে ২২ টাকা হয়েছে।
এদিকে, পবিত্র রমজানে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা পেঁয়াজের মূল্য হঠাৎ করে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় ভুক্ত ভোক্তারা। তাদের মতে বাজারের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রন না থাকায় এ অবস্থা হয়েছে। তবে সাধারণ ব্যবসায়ীরা বলছেন আমদানিকারকদের কাছ থেকে বেশি দরে কিনতে হচ্ছে বলেই খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি।
বন্দর সূত্র জানায়, রোজা উপলক্ষে দেশীয় বাজারে পেঁয়াজের দর কমাতে সরকার ব্যবসায়ীদের শুল্কমুক্ত প্রক্রিয়ায় পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ দেয়। এতে রোজার এক মাস আগে থেকেই বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির হিড়িক পড়ে।
এমনকি, এক সপ্তাহ আগেও বেনাপোল বন্দর এলাকার খোলা বাজারে আমদানি হওয়া ভারতীয় পেঁয়াজ ১২ টাকা কেজিতে সাধারণ মানুষ কিনেছেন।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্র জানায়, আগে ব্যবসায়ীরা প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানিতে সরকারকে ১০ শতাংশ শুল্ককর দিতেন। রোজায় শুল্ককর প্রত্যাহার করে নেওয়ায় চলতি মাস থেকে আমদানির পরিমাণ আগের চেয়ে ৫ গুণ বৃদ্ধি পায়।
এতে মে মাসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারত থেকে প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আনা হয়। এসব পেঁয়াজের আমদানি খরচ পড়ে কেজি প্রতি সাড়ে ১১ থেকে ১২ টাকা।
শার্শার বাঁগআচড়া বাজারের সবুজ ভাণ্ডারের সত্ত্বাধিকারী সলেমান বাংলানিউজকে জানান, তারা প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ কিনছেন ১৪ থেকে ১৫ টাকায়, আর তা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন ১৫ থেকে ১৬ টাকায়।
নাভরণ কাঁচা বাজারের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, তারা পেঁয়াজ পান ১৮ থেকে ১৯ টাকা কেজি দরে। এরপর কিছু খরচ আছে। তাই তারা ২২ টাকা করে বিক্রি করছেন।
বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহা আলম মীর বাংলানিউজকে জানান, গত ৮ জুন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৫০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের ওপর ২৩ টাকা সিঅ্যান্ডএফ ভ্যাট আদায় করে তা খালাস করা হচ্ছে। পেঁয়াজে আমদানি শুল্ক না থাকায় বেশি পরিমাণে আমদানি হচ্ছে বলে তিনি জানান।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে গত এক মাসে শুল্কমুক্ত সুবিধায় পেঁয়াজ আমদানিকারকদের কয়েকজন হলেন, ঢাকার ব্রাদার্স ইমপেক্স, ব্রাদার্স ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল, রফিকুল ট্রেডার্স, খুলনার হামিদ এন্টারপ্রাইজ, সাতক্ষীরার ফিরোজ এন্টারপ্রাইজ, মুন এন্টারপ্রাইজ, বাবা লোকনাথ এন্টারপ্রাইজ, রাফসান ফুডস, কে হাসান ট্রেডিং, খুশি এন্টারপ্রাইজ, আপন ট্রেডার্স, নিসি এন্টারপ্রাইজ, আর ডি এন্টারপ্রাইজ, উজ্জ্বল এন্টারপ্রাইজ, নাইম এন্টারপ্রাইজ, ফারহা ইন্টারন্যাশনাল,বগুড়ার বি কে ট্রেডার্স, সোনালী ট্রেডার্স, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তুসি এন্টারপ্রাইজ, সাহা উত্তম ট্রেডার্স, ফেনীর জাবেদ এন্টারপ্রইজ, যশোরের নাহার ট্রেডার্স, পিন্টু দত্ত ও জিসান এন্টারপ্রাইজ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৬
এসআর