ঢাকা: ঈদ মানেই খুশি। আর সেই ঈদে নতুন পোশাক হবে না তা কী হয়? তাই তো ঈদের নতুন পোশাক কিনতে রাজধানীর অভিজাত শপিংমল বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্সে ভিড় করছেন ক্রেতারা।
দিন যতো যাচ্ছে ঈদের কেনাকাটাও জমে উঠছে বসুন্ধরা সিটিতে। বিভিন্ন ডিজাইনের ও নিত্যনতুন পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারাও।
বুধবার (২২ জুন) রাজধানীর অভিজাত শপিংমল বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্সে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেলো।
ধানমন্ডি থেকে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বসুন্ধরা সিটিতে কেনাকাটা করতে এসেছেন আফরোজা বেগম (৪০)। শপিং মলের বিভিন্ন দোকান ঘুরে ঘুরে পছন্দের কাপড় কিনে নিচ্ছেন তিনি। ঘুরে ঘুরে দেখছে তার সঙ্গে আসা ছেলে-মেয়েও।
‘ছোট-বড় সবাই ঈদের সময় নতুন পোশাকের জন্য বাবা-মায়ের কাছে বায়না ধরে। নতুন পোশাক না দিলে যেন রক্ষা নেই। তাই আগে ভাগে তাদের আবদার পূরণ করতে মার্কেটে এসেছি,’ বলছিলেন আফরোজা বেগম।
কলেজ পড়ুয়া মেয়ে সুমনাকে দেখিয়ে বললেন, ‘ও সবসময় হাল আমলের সঙ্গে মিলিয়ে পোশাক পড়ে। এবার ঈদে ভারতীয় পোশাকের কথা শোনা যাচ্ছে লোকমুখে। মেয়েরা কিনছেও। তবে দেশীয় কাপড়েরও পোশাক কিনবো। ’
আরোহী তাবাসসুম, থাকেন মিরপুরে। মায়ের সঙ্গে ঈদের নতুন কাপড় কিনতে এই শপিং মলে এসেছেন। মায়ের পছন্দ কাতান শাড়ি। তাই জ্যোতি শাড়ি বিতানে মায়ের জন্য কাতান শাড়ি দেখছেন ঘুরে ঘুরে।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, শাড়িতেই মেয়েদের আসল সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। কিন্তু বর্তমান সময়ে শাড়ির প্রতি মেয়েদের এক ধরনের অনীহা দেখা যায়। কিন্তু মায়ের পছন্দের সঙ্গে সাধ্যের মধ্যে শাড়িটি কিনতে হবে।
জ্যোতি শাড়ি বিতানের হেড অব মার্কেটিং আরিফ বাংলানিউজকে বলেন, এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় বিক্রি-বাট্টাও বেশ ভালো। প্রথম রোজা থেকেই মার্কেটে আসতে শুরু করেছেন ক্রেতারা। ‘চাঁদ পর্যন্ত বিক্রি আরও বাড়বে,’ বলে মনে করেন তিনি।
শাড়ির দাম প্রসঙ্গে আরিফ বলেন, এবারের ঈদে কাতান শাড়ির বেশ কয়েকটি ডিজাইনের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে সাউথ ইন্ডিয়ান কাঞ্জি বুনন, যার দাম ১০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা। আর চেন্নাই কাতান দেড় হাজার থেকে ৫০ হাজার, লখনৌ কাতান সাড়ে ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা, তামিলনাড়ু ইফফত ১০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা, মাদ্রাজি তাঁত তন্দুজ ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা, উত্তরপ্রদেশ কাতান ১০ হাজার-৪০ হাজার টাকা, ক্র্যাশ কাতান ৬ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং স্টোন কাতান ২০ হাজার থেকে ৫৫ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
একটু এগিয়ে দেশীয় ফ্যাশন হাউজ অঞ্জনসে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মহুয়া ইয়াসমিনের সঙ্গে। সহপাঠীদের নিয়ে মার্কেটে ঈদ কেনাকাটা করতে এসেছেন তিনি।
ঈদের আগে গ্রামের বাড়ি যাবেন, তাই বাবা-মা ও ছোট ভাইয়ের জন্যে কাপড় কিনতে আসা তার। বললেন, ঈদে বাড়ি গেলে বাবা-মা আর ছোটভাইয়ের জন্যে নতুন কাপড় নেওয়ার মধ্যে অন্যরকম একটা আনন্দ কাজ করে।
‘বাজারে তো নিত্যনতুন ডিজাইনের পোশাক আসছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু আমি সাদামাটা ডিজাইনের কাপড়ই কিনবো। ’
কথা হয় অঞ্জনস ফ্যাশনের বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্স শাখার ম্যানেজার আরমান মিয়ার সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি জানান, এবার আগে থেকেই ঈদের বাজার জমে উঠেছে। ক্রেতা সমাগমও বেশি।
‘বলা যায় এক প্রকার আমরা ক্রেতাদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি,’ যোগ করেন আরমান।
বাংলাদেশ সময়: ০৪২১ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৬
এসজে/এমএ