ঢাকা: বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দাবি করা অতিরিক্ত ভ্যাটের বিরুদ্ধে ওই প্রতিষ্ঠানের আপিল করার সময় সরকারের কাছে জমা দেওয়া ট্যাক্সের পরিমাণ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বাজেটে ‘ট্যাক্স ডিপোজিট বিফর ভ্যাট আপিল’ ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৫০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) অর্থমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ফরেন ইনভেস্টর্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) নেতৃবৃন্দের বাজেট পরবর্তী আলোচনায় আবেদন করার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী ভ্যাট আপিল চার্জ কমিয়ে ১০ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে রাখার আশ্বাস দেন তিনি।
এসময় লিখিত বক্তব্যে এফআইসিসিআই সভাপতি রূপালী চৌধুরী ন্যূনতম কর হ্রাস, ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটরদের কর হ্রাস, ইনকাম ফান্ডের ওপর আরোপিত কর হ্রাস, সুনির্দিষ্ট কিছু আমদানি পণ্যের ওপর ন্যূনতম শুল্ক নির্ধারণ ও ব্যক্তিগত আয়করের ক্ষেত্রে বিনিয়োগসীমা বাড়ানোর সুপারিশ করেন।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও অর্থবছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত করারও দাবি জানান তিনি।
রূপালী চৌধুরী আরো বলেন, গ্যাস, বিদ্যুতের সংযোগ নিতে বিপুল অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। বিনিয়োগের জন্য জমি, জ্বালানি পাওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাই করা একটি গুরুত্বপূণ বিষয়। এফআইসিসিআই বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের অ্যাম্বাসেডর।
বিগত পাঁচ বছরে অনেক বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে। সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) ছাড়া কোনো দেশের উন্নয়ন চিন্তা করা যায় না। আমাদের প্রযুক্তি প্রয়োজন। কারণ বিদেশি কোম্পানি একটি উদ্ভাবনশীল মানবসম্পদ গড়ে তোলার জন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়।
আমি এফআইসিসিআই’র সভাপতি হিসেবে অনেক সভায় উপস্থিত হয়ে দেখেছি, আমাদের বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন নেই। কারণ, বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোই সব কিছু করতে পারে। বাংলাদেশি কোম্পানি মনে করে, আমাদের প্রযুক্তি প্রয়োজন নেই। অর্থমন্ত্রীর কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, এ বাজেটে যেন বিদেশি বিনিয়োগের প্রতি সহানুভূতি দেখানো হয় এবং আমাদের সমস্যা সমাধান করা হয়। কারণ, বাংলাদেশ বিদেশি বিনেয়োগর উপযুক্ত দেশ।
অর্থমন্ত্রী এসময় প্রায় সবগুলো দাবিই বিবেচনা করার আশ্বাস দেন।
বহুজাতিক লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কোম্পানির চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার মাসুদ খান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তিগত আয়করের ক্ষেত্রে বিনিয়োগসীমা কমানো হয়েছে। ফলে মাসে ৪০ হাজার টাকা আয় করেন এমন চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ীকে আগের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি আয়কর দিতে হবে, আর যার মাসিক আয় এক লাখ টাকা, তার আয়কর বাড়বে মাত্র ২৫ শতাংশ। অন্যদিকে, বিনিয়োগসীমা কমানোর ফলে পুঁজিবাজারেও এর প্রভাব পড়বে।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন- এফআইসিসিআই প্রতিনিধি আবদুল খালেক, গোলাম মহিউদ্দিন, দেবব্রত রায় চৌধুরী, বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবরার এ আনোয়ার প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০৩০০ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৬
এসই/এসআই