ঢাকা: শাড়িতেই বাঙালি নারী, বাঙালি নারী মানেই যেনো শাড়ি। নানা উৎসব পার্বনে নারীদের পছন্দের তালিকায় থাকে শাড়ি।
বুধবার (২৯ জুন) রাজধানীর নিউ মার্কেটের বিভিন্ন দোকান ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ চিত্র পাওয়া গেলো।
রাজধানীর আজিমপুর থেকে নিউ মার্কেটে ঈদের শপিং করতে এসেছেন গৃহিণী কামরুন্নাহার। পরিবারের আরও দুই সদস্য রয়েছে তার সঙ্গে।
‘মধ্যবিত্তদের সারা বছর তেমন কোনো কেনাকাটা করা হয় না। রোজার ঈদ আসলেই একটু কেনাকাটা করি। সেক্ষেত্রে শাড়িই কিনতে এসেছি,’ বলছিলেন কামরুন্নাহার।
কারণও জানালেন তিনি-ই। বললেন, ‘যে কোনো অনুষ্ঠানে শাড়ি পড়লে সহজেই গর্জিয়াস লুকটা পাওয়া যায়। পড়েও আরাম পাওয়া যায়। ’
ফারিয়া ইসলাম ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী। নীল তাঁতের শাড়ি কিনেছেন তিনি।
বললেন, নীল জমিনে হালকা গোল্ডেনের ব্লক করা শাড়ি কিনেছি।
শুধু কামরুন্নাহার কিংবা ফারিয়াই নয়, নিউ মার্কেটের শাড়ির দোকানগুলোতে বুধবার ছিলো আরও অনেক নারীর আনাগোনা। ঘুরে ঘুরে দেখে শুনে নিজের সাধ্যের মধ্যে পছন্দের শাড়িটি কিনে নিচ্ছেন তারা।
তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবার কাপড়ের দাম একটু বেশি বলেই মনে করেন তারা। তবে বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে না দিলেও এবছর দাম খুব একটা বেশি নয় বলে দাবি বিক্রেতাদের।
মার্কেটের একটি শাড়ি দোকানের বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, অন্যান্যবার ভারতীয় শাড়ির চাহিদা বেশি ছিলো। কিন্তু এবার টাঙ্গাইল তাঁতের শাড়ি, পাবনার শাড়িসহ দেশীয় কাপড়ের বাহারি রঙের নানা নকশার শাড়িই চাচ্ছেন ক্রেতারা।
‘দেশীয় এসব শাড়ির দাম যেমন কম তেমনি নকশাও মন কাড়া। রাজশাহী সিল্কও চাইছেন ক্রেতারা। এটিকে তারা আভিজাত্য হিসেবেই দেখেন। ’
তিনি জানান, দেশীয় টাঙ্গাইলের শাড়ি ৬০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আর যারা কিনতে চান কাতান শাড়ি তাদের খরচ পড়বে ১ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
রাজশাহী শিল্ক কিনতে খরচ পড়বে ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
মার্কেট ঘুরে দেখা গেলো, অনেক ক্রেতাই কারচুপির কাজ করা শাড়ি চাইছেন বিক্রেতাদের কাছে। শামীমা ইয়াসমিন একজন গৃহিণী। কিনেছেন দেশীয় কোটার ওপর কারচুপির কাজ করা শাড়ি। দাম পড়েছে ১৮০০ টাকা।
বললেন, বিদেশি শাড়ির থেকে আমাদের দেশের শাড়ির গুণাগুণ কোনো অংশেই খারাপ না। সব ধরনের শাড়ি এখন দেশেই তৈরি হচ্ছে।
‘আর বাঙালি নারীর শোভা কিন্তু শাড়িতেই। ’ যোগ করেন তিনি।
দাম বাড়া প্রসঙ্গে বিক্রেতা আনোয়ার বললেন, সব জিনিসের দামই বাড়ছে, বেড়েছে সুতার দামও। তাই কাপড়ে কিছুটা দাম বেড়েছে।
শাড়ির সাথে চুরি না হলে যেনো সাজটাই অপূর্ণ রয়ে যায়। তাই শাড়ি কেনার পর বিভিন্ন গহনার দোকানে ছুটছেন নারীরা।
কলেজ ছাত্রী ফারিয়া বলেন, নীল শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে পুঁতির আর মেটালের গলার মালা, কাচের রেশমী চুরি বেশ মানাবে।
পাশেই দাঁড়ানো বিক্রেতা মনির বাংলানিউজকে জানালেন, পুঁতির সঙ্গে মেটালের নানা রঙের মালা বিক্রি হচ্ছে। এসব মালার দাম পড়বে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা। মান ভেদে আরও বেশি দামেরও আছে। আর রেশমি চুরি পাওয়া যাচ্ছে দাম ১০০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যেই।
অন্যদিকে পাথরের গহনা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত।
শাড়ির সঙ্গে জুতো মানানসই না হলে কী আর চলে? তাঁতের শাড়ির সাথে চামড়ার পাতলা চটি জুতাই নারীদের বেশি পছন্দ বলে জানান হক সুজের বিক্রেতা আল আমিন।
‘তবে সিল্ক ও জর্জেটের সঙ্গে হাই হিল রয়েছে পছন্দের তালিকায়। ’ বলেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়:০৬৩৫ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৬
ইউএম/এমএ