ঢাকা: ধানমন্ডির সীমান্ত স্কয়ারের আগোরা। ভেতরে ঢুকতেই সারি সারি পণ্যের সমাহার।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) সকালে আগোরায় বিভিন্ন পণ্য দেখতে দেখতে চোখ চড়ক গাছ! মিরিন্ডার ৪৫০ মিলি বোতল চোখে পড়লো, যার মেয়াদ এ মাসেই শেষ হয়েছে। উৎপাদনের তারিখ দেওয়া হয়েছে ৪ মাস আগের।
এভাবে নতুন ও পুরনো পণ্য একসাথে মিশিয়ে রাখা হয়েছে ক্রেতাদের ধোঁকা দিতে। ফুড ফ্লেভার, কসমেটিকসেও দেখা গেছে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের ছড়াছড়ি।
আগোরায় রাখা মাছের মূল্যও বেশি রাখা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন ক্রেতারা। ধানমন্ডির এক ক্রেতা সোবহান বলেন, বাইরের কাঁচাবাজারে টেংরার কেজি সাড়ে চারশ’ টাকা। কিন্তু এখানে সাড়ে পাঁচশ’।
কাঁচাবাজারের তুলনায় বেশি মূল্য রাখার কারণেই এখান থেকে এখন মাছ ও মাংস কেনা সম্পূর্ণ বাদ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
এর আগে সকালে ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে জেনেটিক প্লাজা সংলগ্ন আগোরায় ম্যাক্স, ডু-ইট, এক্স-এর মতো বডি স্প্রে গুলোরও দেখা যায় মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। সবগুলো পণ্যেরই উৎপাদন ও আমদানির সময় ২০১৪ সাল।
ভারত থেকে আমদানি করা লরেলের একটি শ্যাম্পুর বোতলে উৎপাদনের মেয়াদ ২০১৪ সাল দেখালেও মেয়াদোত্তীর্ণের কোনো তারিখ উল্লেখ নেই।
একই ব্র্যাঞ্চে থাইল্যান্ডের কিছু কসমেটিকস ও মাউথ ওয়াশও দেখা যায়। বিভিন্ন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া এসব মাউথ ওয়াশ উৎপাদিত হয়েছে ২০১৪ সালে। বিক্রি না হলেও রেখে দেওয়া হয়েছে পণ্যগুলো।
ট্যাং, ফস্টরের মতো কিছু পণ্য রয়েছে, যেগুলো উৎপাদনের মেয়াদ এক বছর পেরিয়ে গেলেও বিক্রি হয়নি। আবার নতুন পণ্যও আনা হয়নি। এছাড়াও আরও যেসব প্যাকেটজাত খাবার রয়েছে সেগুলোরও মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে।
মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি এবং অধিক মূল্যের কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা গোণা আগোরার জন্যে নতুন কিছু নয়। দেশব্যপী তাদের সবগুলো আউটলেটকেই জরিমানা করা হয়েছে এসব অভিযোগে।
গত ১০ জুন চট্টগ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে প্রবর্তক মোড়ের আফমি প্লাজার আগোরায় দেখা যায়, কাঁচা মরিচ কেজি প্রতি ৮০ টাকা, বেগুন ৫৫ টাকা, টমেটো ৬৫ টাকা, খোলা চিনি ৬৩ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অথচ রিয়াজউদ্দিন বাজারে এগুলোর মূল্য অনেক কম। সে সময় এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয় আগোরাকে।
গত ১১ মে পচা মাছ-মাংস ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যদ্রব্য রাখার দায়ে আগোরার শান্তিনগর শাখার ম্যানেজারকে দুই বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করে আদালত।
গত ১১ মার্চ ফার্মগেটের আগোরায় পরিচালিত অভিযানে দেখা যায় মেয়াদোত্তীর্ণ শিশুখাদ্য ল্যাকটোজেন-১ ও ২, তরলজাতীয় খাদ্যের মধ্যে লাবাং ও জুস পাওয়া যায়। মেয়াদোত্তীর্ণ আইসক্রিম, প্রসাধনী সামগ্রী, নারকেল তেল, আমদানি করা ফল বা সবজিসহ আরও বেশ কিছু পণ্য পাওয়া যায় একই অভিযানে। প্রতিষ্ঠানটি বাজারের চেয়ে অধিক দামে পণ্য বিক্রি করছে বলেও প্রমাণ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৬
এমএন/এমজেএফ/