ঢাকা: ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বিজিএমইএ ও সরকারকে সেপ্টেম্বরে চিঠি দেবে শ্রমিকপক্ষ।
ইতোমধ্যে শ্রমিকদের সংগঠনগুলো একাধিক যৌথ বৈঠক করে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক সংগঠন সূত্র।
সূত্রটি জানায়, বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগ, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, গার্মেন্টস শ্রমিক ও শিল্প রক্ষা জাতীয় মঞ্চসহ অন্যান্য গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠন একত্রিত হয়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শ্রমিকপক্ষ বলছে, ‘২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে সর্বশেষ গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রায় তিন বছর শেষ। তিন বছরের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের দাম বেড়েছে। বেড়েছে বাড়িভাড়া, যানবাহনের ভাড়া। সেই একই টাকায় এখন আর কিছুতেই জীবনযাত্রা নির্বাহ করা সম্ভব হচ্ছে না’।
‘আমরা আরো প্রায় ৬ মাস আগে থেকেই মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সর্বশেষ সেপ্টেম্বরে শ্রম মন্ত্রণালয় ও বিজিএমইএকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শ্রমিক নেতারা’।
বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘কোরবানির ঈদের পরপরই আমরা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সরকার ও বিজিএমইকে চিঠি দেবো বলে ভেবেছিলাম। কিন্তু ঈদের পর নিজেদের গোছাতে ও শ্রমিকরা ঈদ করে গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরতে সময় লাগবে। তাই সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই বিজিএমইএ ও সরকারকে আমরা চিঠি দেবো’।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যে ন্যূনতম মজুরি আছে তা দিয়ে এখনকার বাজারে বাসাভাড়া দিয়ে চলা সত্যি কঠিন। এখন শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর সময় চলে এসেছে’।
শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে প্রয়োজনে রাস্তায় নামবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তপন সাহা।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে আমরা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রম মন্ত্রণালয় ও বিজিএমইএকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেবো। এর পরের প্রক্রিয়া তাদেরই সম্পন্ন করতে হবে। সুষ্ঠুভাবে তারা যদি শ্রমিকদের দাবি মনে নেয় তাহলে শ্রমিকরা আরো কঠোর পরিশ্রম করবে এ শিল্পের উন্নতির জন্য। কিন্তু আফসোসের কথা, শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর জন্য বার বার মাঠের আন্দোলনে নামতে হয়েছে। আমরা চাই, এবার সে ধরনের কোনো পরিস্থিতি তৈরি না হোক’।
তবে এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন বিজিএমইএ’র সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাই না। কারণ, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তারা যখন চিঠি দেবে, তখন আমরা এ বিষয়ে কথা বলবো’।
২০১৩ সালের শুরুর দিকে ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা করার দাবিতে আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা। গঠিত হয় মজুরি বোর্ড। মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে মজুরি বোর্ডের ১০ম সভায় শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫ হাজার ৩০০ টাকা ঘোষণা করা হয়।
বিজিএমইএ থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, বর্তমানে দেশে প্রায় ৫ হাজার গার্মেন্টস রয়েছে- যেগুলোতে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক কাজ করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৬
ইউএম/এএসআর