খুলনা: খড়, ঘাস, ভূসি, কাঁঠাল পাতা, রঙিন দড়ি, লাঠি, মালার পসরা সাজানো ছোট ছোট দোকান। কোরবানির পশুর হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা পশুকে খাওয়াতে ও সাজাতে এসব দোকান থেকে আনুষঙ্গিক উপকরণ কিনছেন।
খুলনার জোড়াগেটের পশুর হাটের সামনের অস্থায়ী এসব দোকানি স্বল্প পুঁজির পণ্য নিয়ে বসলেও বেচা-বিক্রি ভালো হওয়ায় রমরমা ব্যবসা করছেন। জোড়াগেটের পশুর হাটটি খুলনা সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত একমাত্র ও খুলনা বিভাগের সর্ববৃহৎ হাট।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে গেলে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা জানান, কোরবানির পশুটিকে সাজানোর জন্যে সবার আগ্রহ থাকে। পশুটিকে সবল রাখতে খামারি-ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা খড়, কুটা, ঘাস ও ভূসি এবং মাংস বানাতে কাঠের পাটাতন (গুঁড়ি), দা, ছুরি, বটি কিনে থাকেন। তাদের চাহিদা পূরণে প্রতি বছর স্বল্পপুঁজি নিয়ে এখানে ব্যবসা করেন তারা।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি আঁটি খড় ও ঘাস ১০-২০ টাকা, প্রতি পিছ গ্লাস মালা ৫০ থেকে ৮০ টাকা, ঝড়ি মালা ১৫ থেকে ২০ টাকা ও রিং মালা ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকা, প্রতি ৫ হাত রশি ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা, ১০ হাত রশি ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দোকানি আসাদুল বলেন, ‘জমে উঠেছে আমাদের ব্যবসা। প্রতি বছর কোরবানির আগে কিছুটা বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে পশুর হাটের আশপাশে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়ে বসেন। ঈদের আগে ৩ থেকে ৪ দিন ধরে জমে ওঠে পশুর খাবার ঘাস, শুকনো খড়, ভুসি, কাঁঠালের পাতাসহ আনুষঙ্গিক নানা উপকরণের ব্যবসা’।
তিনি জানান, এবার প্রায় এক হাজার মৌসুমী ব্যবসায়ী এখানে বসেছেন।
জোড়াগেট এলাকার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রতি বছরই আমি এ হাটে ঘাস, খড়, ভূসি, দড়ি, মালার দোকান দিয়ে থাকি। এ ব্যবসায় ২০ হাজার টাকার পুঁজি নিয়ে বসলে ৪০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব’।
বিক্রেতা পারভিন জানান, কোরবানির পশু কেনার পর ক্রেতারা খড়, কুটা, হোগলা, কাঁঠাল পাতা কিনে নেন। বেশি চাহিদা থাকে খড়, কাঁঠাল পাতা ও ফুলের মালার। ফলে এ সময় এটি তাদের বাড়তি আয়ের একটি পথ করে দেয়।
দোকানি রাসেল জানান, সারা বছর ফেরি করে নানা জিনিসপত্র বিক্রি করেন তিনি। বছরের এই সময়ে মৌসুমী ব্যবসায় নেমে পড়েন। গত বছর কোরবানির আগের ৩ থেকে ৪ দিনে তিনি বেশ টাকা আয় করেছিলেন। এবারও ভালো ব্যবসা হবে বলে আশাবাদী রাসেল।
ক্রেতা আব্দুল্লাহ জানান, এ বছর তিনি একটি গরু ও একটি ছাগল কোরবানি দিচ্ছেন। গরুকে ভূসি আর শুকনো ঘাস খাওয়ান। তবে ছাগলের জন্য কাঁচা ঘাস ছাড়া হয় না। মাত্র দু’দিনে ঘাস কিনতে কিনতে হয়রান তিনি। এসব খাবারের দাম বেশি নিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৬
এমআরএম/এএসআর