ঢাকা: পোস্তার আড়ত থেকে হাজারীবাগ ও সাভারের চামড়া শিল্পনগরীর ট্যানারিগুলোতে চামড়া নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।
পোস্তার চামড়া ব্যবসায়ীদের কোরবানির ঈদ উপলক্ষে কাঁচা চামড়া সংগ্রহের কাজ প্রায় শেষের দিকে।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এবার মূলধন ফেরত না আসার শঙ্কায় আছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। সাভারের চামড়া শিল্পের ট্যানারি মালিকদের মূলধন আটকে যাওয়ায় এ শঙ্কা ব্যবসায়ীদের। এরই সঙ্গে আছে বেধে দেওয়া দরের বেশি দরে চামড়া কেনা, লবণের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে অন্যান্য ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তা বেড়েছে তাদের।
এবার বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার গুডস ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যাসোসিয়েশন ও চামড়া ব্যবসায়ীদের বেধে দেওয়া দরের চেয়েও বেশি দরে এবার চামড়া কিনেছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। তাদের দাবি, পোস্তায় এবার গড়ে প্রতি বর্গফুট কাঁচা চামড়া কেনা হয়েছে ৬০ টাকা দরে। অন্যদিকে বাকি খরচসহ এবার প্রতি বর্গফুট চামড়ার দর পড়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত।
ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য মতে, পোস্তায় এবার ৭শ’ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার ৮শ’ টাকা দর পর্যন্ত প্রতিটি গরুর কাঁচা চামড়া কেনা-বেচা হয়েছে। এর বাইরে প্রতিটি চামড়া ভ্যান, ট্রাক বা পিক-আপ থেকে আড়তে নিতে লেবার খরচ হয়েছে ৫ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিটি চামড়ার মাংস ছাড়িয়ে লবণ মাখতে শ্রমিক প্রতি খরচ হয়েছে ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা। চামড়াপ্রতি লবণ খরচ হয়েছে ২শ’ টাকার। প্রতিটি চামড়ায় আড়তদারি খরচ হয়েছে ৬০ টাকা। চামড়ার ত্রুটি নিরুপণে যাচনদারি খরচ হয়েছে চামড়াপ্রতি ২০ টাকা। পরিবহন খরচ হয়েছে চামড়াপ্রতি গড়ে ৩৫ টাকা। এখন আবার ট্যানারিতে চামড়া পাঠাতে শ্রমিক ও পরিবহন খরচ বাবদ ব্যয় হবে চামড়াপ্রতি ৪৫ টাকা। সব মিলিয়ে প্রতি বর্গফুট চামড়ার দর পড়বে ৮০ টাকার ওপরে।
পোস্তার চামড়া ব্যবসায়ী, চামড়া প্রক্রিয়াজাতকারী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারী এবং রফতানিকারক দিদার হোসেন সেন্টু বাংলানিউজকে বলেন, ‘এবার আমরা গড়ে ৬০ টাকা দরে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেছি। গড়ে প্রতিটি চামড়ার ক্রয় মূল্য পড়েছে ১ হাজার ৩শ’ ৮০ টাকা’।
তিনি জানান, কোরবানির প্রথম দুইদিনে তিনি দুই হাজার পিস চামড়া কিনেছেন। এজন্য আড়ত ভাড়াই দিতে হয়েছে এক সপ্তাহর জন্য দেড় লাখ টাকা।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘কাঁচা চামড়া কেনা মোটামুটি শেষের দিকে। এখন আমরা সেগুলো ট্যানারিতে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। বৈশ্বিক বাজার যেনো স্থিতিশীল হয় এবং আমাদের লগ্নির টাকা যেনো উঠে আসে’।
একজন চামড়া ব্যবসায়ী নাম না প্রকাশের শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েক বছরে ট্যানারি মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন পোস্তার চামড়া ব্যবসায়ীরা। এ ব্যবসা এখন পাটের ব্যবসার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতিতে চলে গেছে। এক বছরের চামড়ার দাম পরের বছরে দেন ট্যানারি মালিকরা। এবার এ পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৬
আরএম/জিপি/এএসআর