ঢাকা: পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারে সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। বিশেষ করে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় কাঁচা পণ্যের দাম বেশ বেড়ে গেছে। বেড়েছে মুরগির দামও। তবে, কমেছে পেঁয়াজের দাম। খানিকটা স্থিতিশীল রয়েছে চাল ও মাছের বাজার। আর অপরিবর্তিত রয়েছে রসুন, আদা ও ডাল এবং গরু-খাসীর মাংসের মূল্য।
বিক্রেতাদের দাবি, টানা বৃষ্টি ও ঈদের ছুটিতে সরবরাহ কম থাকায় বাজারমূল্যে প্রভাব পড়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে সবজি এবং কাঁচা মরিচের মূল্যে।
পাইকারি ও খুচরা দু’ধরনের বাজারেই কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা দরে।
কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, এখানে এখনও ঈদের রেশ রয়ে গেছে। এমনকি অধিকাংশ দোকান এখনও খোলেইনি।
যেসব দোকান খুলেছে তার মধ্যে পাইকারি দোকানগুলোতে সবজি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। আর খুচরা দোকানগুলোতে সবজি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
এই সবজিগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢেঁড়স, বেগুন, পেঁপে, শসা, করলা, গাজর, কাঁচাকলা, লাউ, কচুরমুখী, মুলা, ঝিঙা, কুমড়া, বরবটি, চিচিঙ্গা, পটল ও টমেটো। গত সপ্তাহে এসব সবজির দাম গড়ে ৫-১০ টাকা কম ছিল বলে জানান বিক্রেতারাই।
অন্য সবজির মধ্যে আলু প্রতিকেজি ২৫ টাকা, শিম ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া (ছোট) প্রতিপিস ৪০ টাকা, ফুলকপি প্রতিপিস ৫০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতিপিস ৪০ টাকা, লাল শাক প্রতিমুঠো ১৫ টাকা, পুঁই শাক ২৫ টাকা, লাউ শাক ২০ টাকা এবং লেবু প্রতিহালি ৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এসব সবজির দামও গত সপ্তাহে গড়ে ৫-১০ টাকা কম ছিল। মিরপুর ১০ নম্বরের সেনপাড়া পর্বতা কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা সাহেদ বাংলানিউজকে জানান, ঈদের ছুটিতে সরবরাহ কম থাকায় বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। ঈদের আগের সপ্তাহের তুলনায় সবজি কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা করে বেড়েছে। সবচেয়ে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। ঈদের আগে যে মরিচ বিক্রি করেছি ৭০-৮০ প্রতিকেজি, এখন সেটা বেড়ে ৩০০ টাকা পর্যন্ত ছুঁয়ে গেছে।
এখানে বাজার করতে আসা ক্রেতা আহাদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের আগেই সবজির দাম কম-বেশি ছিলো। এখন দেখি ১০-২০ টাকা বেড়ে গেছে। কাঁচা মরিচে তো হাতই দেওয়া যাচ্ছে না। তবে পেয়াজ-রসুনের দাম ঠিক আছে।
এছাড়া, ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১২৫ টাকা করে বিক্রি হলেও এখন দাম বেড়ে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, লেয়ারও বেড়ে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা। আকারভেদে দেশি মুরগি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা। পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা।
দর অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের। এটি বাজারভেদে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪২০ টাকায়। আর খাসির মাংস প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়।
এছাড়া কমেছে পেঁয়াজের দাম। অপরিবর্তিত রয়েছে রসুন, আদা ও ডালের দাম। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৩০-৩৫ টাক, আর আমদানি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২৫ টাকায়।
প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। দেশি মসুর ডাল মানভেদে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা এবং আমদানি মসুর ডাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা। মুগ ডাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। আর চালের দাম রয়েছে স্থিতিশীল।
ঈদের সময় থেকে ঈদের পর পর্যন্ত মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে বলে দাবি করছেন বিক্রেতারা। তবে ক্রেতাদের দাবি, বাজারে মাছ কম থাকায় এরও দাম একটু বেড়েছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট আকারের রুই মাছ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়, বড় আকারের রুই প্রতিকেজি ৩৫০ টাকায়, কাতল মাছ ২২০ থেকে ২৮০ টাকায়, চিংড়ি ৪০০ টাকায় এবং তেলাপিয়া প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২২০ টাকায়।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৬
এমসি/এইচএ/