ঢাকা: ২০২১ সালে ৫০ বিলিয়ন রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শিল্প কারখানায় নতুন করে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি না করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমইএ) ভাইস প্রেসিডেন্ট ফজলুল হক। একই সঙ্গে নতুন কারখানায় গ্যাস সংযোগ দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
বুধবার (অক্টোবর ০৫) রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লু ওয়ার্টার গার্ডেনে দুই দিনব্যাপী ডেনিম অ্যান্ড জিন্স বাংলাদেশ শো’য়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত দেভরিম ওজতুর্ক, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) ভাইস প্রেসিডেন্ট আতিক এ রাব্বানী ও ডেনিম অ্যান্ড জিন্স বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা স্বন্দীপ আগারওয়াল।
তিনি বলেন, সরকার আগামী ২০১২ সালে রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানির মাধ্যমে তার সিংহভাগ অর্জিত হবে।
ভারতে ডেনিমের আগমন ৫০ বছর হলেও মাত্র ১০ বছর আগে বাংলাদেশে ক্ষুদ্র পরিসরে ডেনিমের আগমন ঘটে জানিয়ে বিটিএমইএ ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, গ্যাস সংযোগ দিলে এবং শিল্প কারখানায় গ্যাসের দাম না বাড়ালে মাত্র ২০ বছরে ভারতকে অতিক্রম করবো। কারণ, এখানকার উদ্যোক্তাদের উদ্যোগ ও উদ্যম অনেক বেশি। একইসঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবিশে চলমান স্থিতিশীলতা বজায় থাকার আশাবাদও ব্যক্ত করেন তিনি।
ফজলুল হক বলেন, ক্ষুদ্র পরিসরে শুরু করে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। রপ্তানি আয় বাড়ার পাশাপাশি দেশে কর্মসংস্থান তৈরি এবং নারীর ক্ষমতায়নেও কাজ করে যাচ্ছে এ সেক্টর। গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে ৮০ শতাংশ নারী কাজ করছে। কিছুদিন আগেও এদেশের নারীরা নির্যাতিত ও অবহেলিত ছিল। অথচ এখন নারীদের আর্থিক সাহায্যের জন্য পুরুষরা অপেক্ষা করে থাকে।
ভিন্টেজ রিকল থিম নিয়ে ডেনিম পণ্যের ষষ্ঠ এ আসরে ডেনিম পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি সেমিনার ও ওয়ার্কশপের আয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। রেডিসন ব্লু ওয়ার্টার গার্ডেনের পুরো ভেন্যুজুড়ে তৈরি করা হয়েছে ডেনিম ভিলেজ। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৮টি ডেনিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবারের ডেনিম উৎসবে অংশগ্রহণ করেছে।
আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশ বর্তমানে ডেনিম রপ্তানিকারক দেশগুলোর মেধ্য শীর্ষস্থানে রয়েছে। ইতিমধ্যে চীনের চেয়ে ৫০ শতাংশ ডেনিম পণ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে সরবরাহ করছে বাংলাদেশের উৎপাদনকারীরা। আগামী ২০২০ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে ডেনিমের চাহিদা ৬৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। যার ৭০ ভাগ যোগান দেবে এশিয়ার দেশগুলো। এক্ষেত্রে আগামী দিনে বাংলাদেশ ডেনিম উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে এশিয়ার অন্যতম দেশ হিসেবে বিবেচিত হবে।
অনুষ্ঠানে স্বন্দীপ আগারওয়াল বলেন, সারা পৃথিবীর ডেনিম ক্রেতাদের চাহিদা মেটানোর জন্যে যে পর্যায়ের অবকাঠামো, জনবল এবং আর্থিক সূচক থাকা আবশ্যক তার বিচারেও এক অনন্য অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০২১ সাল নাগাদ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ডেনিম ভূমিকা রাখবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ষষ্ঠ ডেনিম এন্ড জিন্স বাংলাদেশ শো’তে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ডেনিম পণ্য উৎপাদনকারীরা অনলাইনের মাধ্যমে তাদের পণ্য প্রদর্শন করবেন এবং এই প্রদর্শনীর বিভিন্ন বিষয়ও তারা দেখতে পারবেন। অনুষ্ঠানে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ডেনিম বিশেষজ্ঞরা তাদের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান, ডেনিম পণ্যের বিস্তার ও বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবার ০৫, ২০১৬
জেপি/আরআই