ঢাকা: বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নে বিপুল পরিমাণ অর্থায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকালে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আইডিএ হচ্ছে বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর সহায়তা করতে গঠিত বিশ্বব্যাংকের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। এখান থেকে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দারিদ্র্য দেশগুলো ঋণ পেয়ে থাকে। বাংলাদেশও তিন বছরের প্যাকেজে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে বাংলাদেশ স্বল্প সুদে ঋণ নিয়েছে।
এর আওতায় বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ২৪ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে বিশ্ব ব্যাংকের কাছ থেকে। ২০১৪-১৫ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আইডিএ-এর আওতায় চার বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক।
২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ৯৪৪ মিলিয়ন এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার ছাড় করা হয়। পুরো ঋণের হিসাব হবে চলতি অর্থ বছরের শেষে।
প্রায় চল্লিশ মিনিটের বৈঠকে কিমের নেতৃত্বে বিশ্ব ব্যাংকের নয় সদস্যের প্রতিনিধি দলে সংস্থার দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানেট ডিক্সন, বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ পল রোমার এবং ঢাকার আবাসিক প্রতিনিধি চিমিয়াও ফান উপস্থিত ছিলেন।
মুহিতের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে ছিলেন অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন।
বৈঠকের পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশে অর্থায়নের জন্য আমরা আইডিএ ফান্ড বৃদ্ধি করছি। এজন্য খোলা বাজার থেকে ২৫ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা হবে। এর বাইরে বাংলাদেশের অপুষ্টি দুর করতে আগামী দুই বছরে আরও একশ কোটি ডলার দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনের অসামান্য অর্জন হয়েছে। এত দ্রুত আর কোন দেশ দারিদ্র্য দুর করতে পারেনি। এছাড়াও যক্ষা, ডায়ারিয়া ও শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে সাফল্য অর্জন করেছে। এসব রোগে হাইতি ও যুক্তরাষ্ট্রের ইস্টকোস্টে বহু মানুষ মারা যাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
সাংবাদিকরা পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন না করার অনুভুতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের অন্যখাতে বিনিয়োগ করছি। আরও বিনিয়োগের বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংক আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বাংলাদেশের যোগাযোগসহ সব খাতেই বিশ্ব ব্যাংক সহায়তা দিয়ে থাকে। জটিলতা কেটে যাওয়ার পর পদ্মা সেতুতে যে তহবিল বিশ্ব ব্যাংকের দেওয়ার কথা ছিল, তারা অন্য প্রকল্পে সেটি দিয়েছে। এর মাধ্যমে বিষয়টির সমন্বয় হয়েছে’।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংকের কাছে আমাদের অনেক প্রত্যাশা। আশা করছি তারা সে প্রত্যাশা পূরণ করবে। কারণ তিনি (জিম ইয়ং কিম) যখন দায়িত্ব নেন তখন বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের কিছু সমস্যা চলছিল। শেষে সমস্যার সমাধান হয়। এখন বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই ভাল’।
বাংলাদেশ সময়: ১১০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৬/আপডেট ১৯৩১ ঘণ্টা
ইএস/বিএস