ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চিনি’র শুল্ক কমানোর কথা ভাবছে সরকার

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৬
চিনি’র শুল্ক কমানোর কথা ভাবছে সরকার

ঢাকা: বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি আমদানিতে সরকার নির্ধারিত শুল্ক ২০ টাকারও বেশি। খুচরা বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকা দরে।

স্থান ভেদে দর আরও বেশি। এতে সরকারি কোষাগার স্ফীত হলেও জনগণের পকেটের ওপর চাপ বাড়ছে। তাই সরকার ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তা করে এ ট্যাক্সের বোঝা কমানোর চিন্তা করছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এক বছর আগে আর্ন্তজাতিক বাজারে প্রতি টন চিনির দর ছিলো ৩শ’ ২৯ ডলার। বর্তমানে সে দর বেড়ে দাড়িয়েছে ৫শ’৯০ ডলারে। বিশ্ব বাজারে চিনির দরের এ ঊর্ধ্বলম্ফনে গত ৬ মাসে দেশের বাজারে চিনির দর বেড়েছে কেজিতে ৩০ থেকে ৩২ টাকা।

কিন্তু এরপরও মাস খানেক আগে কেজি প্রতি ৫ টাকা দর বাড়ানোর দাবি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলেন শীর্ষ চিনি উৎপাদকরা। কারণ হিসেবে প্রতিকেজি চিনি আমদানির চেয়ে বর্তমান বাজার দর কম বলে দাবি করেছিলেন তারা।

অন্যদিকে গত মে মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বাজার স্থিতিশীল রাখতে চিনি আমদানির ওপর সরকারি ট্যাক্স প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছিলো।

এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, আমদানি করা পণ্যের দর নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের পক্ষে কঠিন। তাই বলে, মন্ত্রণালয় হাল ছেড়ে বসে নেই। আমরা সারাক্ষণ বিশ্ব বাজারের সঙ্গে দেশের চলমান বাজারের সামঞ্জস্য মনিটরিং করি। কিন্তু আপনি তো মুক্ত বাজার অর্থনীতির দেশে ক্রয় দরের চেয়ে কম দরে পণ্যবিক্রি করতে কাউকে বাধ্য করতে পারবেন না।

তিনি বলেন, আমরা সারাক্ষণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছি। দাম কমানোর পদ্ধতি নিয়ে নিজেরাও আলোচনা করছি। ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর আবদার নিয়ে এসেছিলো। আমরা তা আমলে নেইনি। বরং ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তা করে কিভাবে দর কমানো যায়, সে বিষয়েও চিন্তা করছে সরকার।
 
সিনিয়র সচিব বলেন, দেশের চিনি মিলগুলোর কথা চিন্তা করে সরকার চিনি আমদানিকে অনুৎসাহিত করেছিলো। এজন্য এ বছরের শুরুতেই চিনি আমদানিতে কেজি প্রতি ১৪ টাকা ট্যাক্স ধার্য করেছিলো সরকার। বর্তমানে যা দাঁড়িয়েছে কেজি প্রতি ২০ টাকার ওপরে। দেশের সরকারি মিলগুলোতে আগে হাজার হাজার টন চিনি অবিক্রিত পড়ে থাকলেও গত রমজানেই চিনি মিলগুলোর গুদাম ফাঁকা হয়ে গেছে। এখন মিলগুলোর কাছে আর কোনো চিনি নেই। এই অবস্থায় সরকার চিনি আমদানির ওপর ধার্য করা ট্যাক্স তুলে দেওয়ার চিন্তা করছে।

তিনি জানান, এ নিয়ে অচিরেই শিল্প মন্ত্রণালয়, অর্থমন্ত্রণালয়, ট্যারিফ কমিশনের সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে।

এর আগে গত ৯ মে, চিনি আমদানিতে সরকারি ট্যাক্স আরোপের ফলে দর বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। তারা ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তা করে এ ট্যাক্স প্রত্যাহারেরও সুপারিশ করেছিলো।
 
সংসদীয় কমিটি ওই সুপারিশে বলেছিল, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিল চালিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় এমনিতেই চিনির উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে ফেলে। ফলে তাদের চিনি বিক্রি হয় না। এই ক্ষতি পোষাতে সরকার জনগণের পকেট কাটতে পারে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৬
আরএম/ওএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।