ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সিলেটে ছুটির দিনে মেলায় করদাতাদের ভিড়

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৬
সিলেটে ছুটির দিনে মেলায় করদাতাদের ভিড় ছবি: আবু বক্কর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: প্রথমবারের মতো কর দিতে এসে ফরম পূরণে বিড়ম্বনায় পড়েন জালালাবাদ গ্যাস কর্মকর্তা সুলতান আহমদ। তাৎক্ষণিক তাকে সহযোগিতা করেন কর কর্মকর্তা শফিকুর রহমান।

ফলে খুব সহজেই আয়কর জমা দিতে সক্ষম হন তিনি।

শনিবার (০৫ নভেম্বর) নতুন করদাতা হিসেবে কর দিতে মেলায় আসেন দক্ষিণ সুরমা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুই চিকিৎসক নুরিয়া জামান ও তাসমিয়া আক্তার জেরিন।

প্রথমবারের মতো কর দিতে এসে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।

চিকিৎসক তাসমিয়া আক্তার জেরিন বলেন, কর দিতে এসে মনের মধ্যে একটা ভীতি কাজ করছিল। মেলায় আসার পর তা কেটে গেছে। খুব সহজেই রিটার্ণ দাখিল করেছি।

শুক্রবার (০৪ নভেম্বর) ছুটির দিন থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে করদাতাদের উপস্থিতি ছিল অনেকটা কম। তবে শনিবার (০৫ নভেম্বর) সকাল থেকে মেলায় ছিল করদাতাদের ঢল।

রিটার্ণ দাখিল থেকে ইটিআইএন রেজিস্ট্রেশন বুথ সবখানেই ছিল সেবাগ্রহীতাদের ভিড়। সেবাগ্রহীতাদের সামাল দিতে অনেকটা হিমশিম খেতে হয় সহায়তা ডেস্কে থাকা কর্মকর্তা কর্মচারীদের। এরপরও কেউ যাতে অসন্তুষ্ট হয়ে না যান সেদিকে তদারকি ছিল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ কবির আহমদ বলেন, শুক্রবার মেলায় আসতে পারিনি। তাই শনিবার এসে ভিড় থাকলেও জটিলতা ছাড়াই রিটার্ণ দিয়েছেন ১১ হাজার ৯৫৬ টাকা।

মেট্টোপলিটন ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক শাহ মোহাম্মদ আমজাদ আনোয়ার বলেন, এবার দ্বিতীয়বার রিটার্ন দিয়েছি। আগের চেয়ে এ বছর আয়কর গ্রহণের কার্যক্রমে অনেক উন্নতি হয়েছে। এবার ১১ হাজার ৩৮০ টাকা রিটার্ণ দিয়েছেন বলেন তিনি।

এছাড়া এবার মেলায় ই-পেমেন্ট বুথ থাকায় সেখানেও ছিল মানুষের জটলা।   উৎসুক করদাতারা অনেকে অনলাইনে পেমেন্ট করতে দেখা গেছে।   শনিবার ২৫ জন করদাতা ই-পেমেন্ট বুথে কর দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ই-পেমেন্ট বুথে সহজেই কর প্রদান করেন অগ্রগামী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা কুহেলী রায়।   তিনি চার হাজার টাকা কর দেন অন লাইনে।  

সিলেট কর অঞ্চলের কর কমিশনার তৌহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, মেলায় আসা সেবাগ্রহীতারা যাতে বিড়ম্বনায় না পড়েন সেজন্য আমরা সতর্ক দৃষ্টি রেখেছি।   কেউ যাতে অসন্তুষ্ট হয়ে না যান সেজন্য কন্ট্রোল রোম স্থাপন করে তদারকি করা হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, মেলায় ২৪টি স্টলের মধ্যে এবার নতুন সংযোজন ‘ট্যাক্স উইথ টি’ ট্যাক্সের সঙ্গে চা।   সেবাগ্রহীতাদের সিলেটি সংস্কৃতিতে চা আপ্যায়ন করিয়ে মধুর সম্পর্ক স্থাপন করে চলেছে সিলেট কর কমিশন।

মেলায় ৪টি বুথে ২২টি সার্কেলের টিআইএন রেজিস্ট্রেশন ও রি-রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে। রিটার্ন গ্রহণ  হচ্ছে ৬টি বুথে।   এছাড়া সার্ভিস ডেস্কে দুই শিফটে কাজ করছেন ২৮ জন।   সেই সঙ্গে রয়েছে অভ্যর্থনা কক্ষ, তথ্য কেন্দ্র ও অধিক্ষেত্র অনুসসন্ধান, কন্ট্রোল রুম, সোনালী ব্যাংক, ই-পেমেন্ট বুথ,জনতা ব্যাংক, শুল্ক ও ভ্যাট, জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, আয়কর আইনজীবী, মিডিয়া সেল, মেডিকেল সার্ভিস, সার্ভিস ডেস্ক এবং সহায়ক হিসেবে ফটোকপি করার জন্য রাখা হয়েছে আরেকটি বুথ।    

সিলেট নগরীর রিকাবিবাজার মোহাম্মদ আলী জিমনেশিয়ামে সাতদিন ব্যাপী আয়োজিত আয়কর মেলার চতুর্থ দিনে (০৩ নভেম্বর) সিলেটসহ চার জেলায় ১৮ কোটি ১৪ লাখ ৮১ হাজার ৪৮৪ টাকা কর আদায় হয়েছে। এতে সাত দিনে শেষে মেলায় লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ কর আদায়ের সম্ভবনা রয়েছে মনে করেন কর কর্মকর্তারা।   সিলেটে সপ্তাহব্যাপী মেলায় কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করা হয় ২০ কোটি টাকা।  

বিভাগীয় নগরী সিলেটে সাতদিন মেলা চললেও মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ চারদিন করে মেলা চলবে। এছাড়াও সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় দু’দিন ও মাধবপুর, ছাতক, বালাগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলে একদিনের জন্য ভ্রাম্যমাণ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৬
এনইউ/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।