ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্যারিস্টার না হয়ে, ব্যবসায়ী হয়েছি

উর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
ব্যারিস্টার না হয়ে, ব্যবসায়ী হয়েছি বাংলানিউজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কথা বলছেন মাহমুদ হাসান খান বাবু। ছবি: দীপু মালাকার

ঢাকা: মাহমুদ হাসান খান বাবু। রাইজিং ফ্যাশন লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তাদের কাছে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত একটি নাম। বর্তমানে মিরপুর, গাজীপুর ও আশুলিয়ায় ৮টি গার্মেন্টসে ৮ হাজার শ্রমিকের ভরসাস্থল এই রাইজিং ফ্যাশন লিমিটেড। 

বাংলানিউজের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে পোশাকশিল্প ও নিজের ব্যবসাজীবন সম্পর্কে তুলে ধরেছেন অনেক তথ্য ।  

কিন্তু চলার পথটা খুব মসৃণ ছিলো না।

পড়ালেখা শেষ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। মা-বাবা’র ইচ্ছা ছিলো ব্যারিস্টার হবেন মাহমুদ হাসান খান বাবু। ব্যারিস্টারি পড়তে লন্ডনে টিকেট কাটাও সম্পন্ন। কিন্তু বরাবরই সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছা তাড়িয়ে বেড়িয়েছে যাকে তাকে দমিয়ে রাখা কঠিন। কিন্তু নিজেই সিদ্ধান্ত নেন গার্মেন্টস ব্যবসায় শুরু করার। বলতে গেলে পরিবারের সবার বিপক্ষে গিয়েই ১৯৯০ সালে শুরু করেন গার্মেন্টস ব্যবসা। কথাগুলো বলছিলেন বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি ও রাইজিং ফ্যাশন লিমিটেডের এমডি মাহমুদ হাসান খান বাবু।  

মূলত দাদা ফজর আলী খান ছিলেন কাপড়ের ব্যবসায়ী। দাদার কাছ থেকেই ব্যবসায় আসার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। কাজ শুরু করার পর আর কেউ সহায়তা করুক আর না করুক মা ছিলেন পাশে; যে কারণে শত বাধার পরও সফলতা ধরা দিয়েছে। বলছিলেন রাইজিং ফ্যাশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।  

আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি মাহমুদ হাসান খান বাবুকে। রাত-দিন কাজ করেছেন নতুন কিছু করার প্রয়াসে। ওয়ালমার্ট, জারা, ভিএফসহ বিশ্বের নামকরা ৯ টি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করছে রাইজিং ফ্যাশন লিমিটেড। বর্তমানে রাইজিং গ্রুপের প্রতি বছর টার্নওভার প্রায় ২শ মিলিয়ন ডলার।  

আগামীতে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় পোশাকশিল্পের সবচেয়ে বড় প্রতিযগী দেশ হবে ভারত—এমনটাই মনে করেন বিজিএমইএ এর এই সহ-সভাপতি।  
তিনি বলেন, আমরা যেখানে ৩০ বিলিয়ন ডলার রফতানি করছি সেখানে ভারত করছে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার। সেখানকার গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সরকার নানা ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছে এই শিল্পকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। আমাদের সরকারও আমাদের নানা ধরনের সহায়তা দিচ্ছে। শ্রমিকদের জন্য হেলথ কার্ডের মতো কিছু পদক্ষেপ নেয়া উচিত সরকারের। তাছাড়া সম্প্রতি সরকার পোশাকশিল্পের জন্য কারেন্সি অ্যাডজাস্টমেন্টের উদ্যোগ নিয়েছে যা সত্যি প্রশংসার দাবিদার।  বাংলানিউজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কথা বলছেন মাহমুদ হাসান খান বাবু।  ছবি: দীপু মালাকারঅন্যদিকে অ্যাকর্ড বাংলাদেশের আইনকানুন না মানছে না বলে উদ্যোক্তারা অনেক সমস্যায় পড়ছেন। মাহমুদ হাসান খান বাবুর মতে, অ্যাকর্ড তাদের স্টিয়ারিং কমিটিতে বিজিএমইএ এর সদস্যদের রাখার কথা বললেও তারা তা করছেন না। তারা বিজিএমইএ ও সরকারের কোনো কথাই মানছে না।  

আমেরিকার বাজারে জিএসপি পুনর্বহালের বিষয়ে রাইজিং ফ্যাশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, রানা প্লাজার দুর্ঘটনার চার বছরে শ্রম পরিবেশের নানা উন্নয়ন হয়েছে। এখন  জিএসপি ইস্যুতে  বাংলাদেশের বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নেবে সে বিষয়ে আমেরিকাকে ভাবতে হবে।

বিজিএমইএ’র বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ সেপ্টেম্বরেই শেষ হতে যাচ্ছে। বিজিএমইএ এর আগামী সভাপতি হিসেবে মাহমুদ হাসান খান বাবুর নামই জোরেসোরে শোনা যাচ্ছে।  
এ বিষয়ে বলতে গিয়ে বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি বলেন, আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি পদের দৌড়ে যারা আছেন তাদের একজন আমিও। আমি কাজ করছি। ভোটাররা যদি চান তাহলে হয়তো আমি দায়িত্ব নেবো। বিজিএমইএ এর আগের সকল সভাপতি ও ভোটাররা যা চান তাই তো হবে।  

আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হলে বিজিএমইএ’কে একটি নলেজ বেইজড অর্গানাইজেশন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হবে বলে মন্তব্য করে মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, বিজিএমইএ দিন দিন উন্নতি করছে। আমি যদি সভাপতি নির্বাচিত হই তাহলে নলেজ বেইজড বিজিএমইএ গড়ে তুলতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেবো।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
ইউএম/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।