ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

গ্রাহকের সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে সানলাইফের সাবেক এমডির গড়িমসি

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০১ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৭
গ্রাহকের সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে সানলাইফের সাবেক এমডির গড়িমসি

ঢাকা: প্রমিনেন্ট এম. সি. এস লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানে এককালীন (ডিপিএস) সঞ্চয় হিসেবে ৫ হাজার টাকা জমা রাখেন শিক্ষার্থী মো. মাইনুল ইসলাম। দ্বিগুণ মুনাফার আশায় বাগেরহাটের শরণখোলায় হাফেজি মাদরাসায় পড়ার সময় ওই টাকাগুলো তিনি সঞ্চয়ী হিসেবে রাখেন।

২০১৬ সালে ডিপোজিটের মেয়াদ শেষ হলেও এখনও টাকা উত্তোলন করতে পারেননি মাইনুল। একই অবস্থা বাগেরহাটের শরণখোলার অলি উল্লাহর।

তিনিও দ্বিগুণ লাভের আশায় ৯ হাজার ৩০০ টাকা সঞ্চয় রেখেছিলেন। কিন্তু এখন তিনি আর সেই টাকা ফেরত পাচ্ছেন না।

এভাবে প্রমিনেন্ট এম. সি. এস লিমিটেড সমবায়ের নাম করে হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম সোলায়মান হোসেনের বিরুদ্ধে। যিনি একইসঙ্গে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী ও এমডির দায়িত্ব ‍পালন করেছিলেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২ জুন কোম্পানির এমডি পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
 
বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে অভিযোগ দেওয়ার পর ভুক্তভোগী মাইনুল বাংলানিউজকে বলেন, ৫ হাজার টাকার সঞ্চয়ে মুনাফাসহ ৫ বছর পর ১০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি আমার কাছ থেকে টাকা নেয়। এ ডিপোজিটের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছরের (২০১৬) ২২ অক্টোবর। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর যোগাযোগ করলে আমাকে সঞ্চয়ের টাকার মূল কাগজপত্র জমা দিতে বলে। কাগজপত্র নিয়ে এখন পর্যন্ত টাকা দিচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি।
 
মাইনুল ইসলামের মতোই শরণখোলার অলিউল্লাহও দ্বিগুণ লাভের আশায় সঞ্চয় রেখেছিলেন। কিন্তু এখন আর টাকা ফেরত পাচ্ছেন না।
 
সম্প্রতি আইডিআরএ’র কাছে এ সংক্রান্ত অভিযোগ দেওয়া ছাড়াও সানলাইফে চাকরি করিয়ে বেতন না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সোলায়মান হোসেনের বিরুদ্ধে।
 
মাইনুলের লিখিত আবেদনে বলা হয়, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের (সাবেক) এমডি সোলায়মান হোসেন তার পিতা-মাতার নামে ‘হালিমা সাত্তার এডুকেশন অ্যান্ড হেলথ সোসাইটি‘ প্রতিষ্ঠানের অধীনে প্রমিনেন্ট এম. সি. এস লিমিটেড খুলে সাধারণ গ্রাহকদের অধিক মুনাফা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মাঠ পর্যায় থেকে সমবায়ের নামে টাকা উত্তোলন করেন। মেয়াদ শেষে প্রতিশ্রুত টাকা ফেরত চাইলে টাকা না দিয়ে আমাদের জানানো হয় যে, তোমাদের টাকা সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সে স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তুআমিসহ কোনো গ্রাহক সানলাইফের কোনো কাগজপত্র পাইনি।
 
একই অভিযোগ করে ৯ হাজার ৩০০ টাকার লাভসহ ফেরত পেতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন আরেক ভুক্তভোগী অলি উল্লাহ। তাদের মতোই হাজার গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
 
২০০৮ সালে এম সোলায়মান  হোসেন এইচএস গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করে কার্যক্রম শুরু করেন। এ গ্রুপের অধীনে তার ৬টি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে-এইস এস হেলথ অ্যান্ড এডুকেশন সোসাইটি, এইচ এস মেডিসিন প্লানেট, এইচ এস বিজনেস প্রমোটার্স লিমিটেড, এইচ এস রিয়েল এস্টেট লিমিটেড,প্রমিনেন্ট ইসলামী ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্স এমসিএস লিমিটেড (ঢাকা) ও প্রমিনেন্ট সেভিংস অ্যান্ড ক্রেডিট এমসিএস লিমিটেড খুলনা।
 
এ বিষয়ে সানলাইফের এমডি সোলায়মান হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি এখন কোম্পানিতে নেই। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা।

বাংলাদেশ সময়: ৬০০০ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৭,
এমএফআই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।