ফিরতি মেসেজ ও মোবাইলে ফোন করে তারা অর্ডার কনফার্ম করে। অর্ডার নম্বর ৩০০৮১৫১৯৮।
এরপর শুরু হয় মেয়ের প্রতীক্ষা। প্রায় প্রতিদিনই জিজ্ঞাসা করে, কোনো দিন জিজ্ঞাসা না করলেও খেয়াল রাখে আমার হাতে কোনো প্যাকেট রয়েছে কিনা। কোনো কিছু না দেখে কিছুটা হতাশও হয়। বাবা হয়ে আমার তা নজর এড়ায় না।
এর মধ্যেই মঙ্গলবার (৪ জুলাই) রাত ১০টা ২৮ মিনিটে মোবাইলে এসএমএস আসে আমার প্যাকেজ রেডি। ১ থেকে ৩ বিজনেস ডে’র মধ্যে তারা আমাকে পণ্য সরবরাহ করবে।
মেয়ের আনন্দ আর ধরে না। কখন দারাজ ডটকম এসে হাজির হয়, সে দুশ্চিন্তায় পণ্যের টাকা আলাদা করে মানিব্যাগের এক চিপায় ফেলে রাখলাম।
৫ জুলাই সকালে মুষলধারে বৃষ্টি। ঢাকার ডিএনপি বাঁধের ভিতর জুরাইনে বাসা হওয়ায় বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। রিকশা, সিএনজি চলে না। অন্য সময় হলে হয়তো অফিসে আসতাম না। কিন্তু মেয়ের ভিআর আনতে পারে দারাজ। পাছে আমাকে না পেয়ে ফিরে যায়, এমন আশঙ্কায় আড়াই কিলোমিটার পথ পানি ভেঙে পুরান ঢাকার অফিসে উপস্থিত হই সকাল ৯টায়। আসার সময় মেয়ে বলেছিল, ‘বাবা, ভিআর আসলেই কিন্তু ফোন দিও। ’
প্যাকেজ কনফার্ম করার ১২ ঘণ্টা না পেরোতেই সকাল ১০টায় আমাকে একটি ইমেইল করে দারাজ। তাতে লেখা 'Sorry! Your order has been cancelled.’
এর আগেও অনলাইন শপ দারাজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের সরবরাহ করা পণ্যের মান নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। কম দামের বিজ্ঞাপন দিয়ে পরে সেই পণ্য স্টকে নেই এবং বেশি দামের পণ্য কেনায় প্ররোচিত করার অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে নতুন নয়।
এবার যেটা ঘটালো তা প্রতিষ্ঠানটির চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ছাড়া কিছুই নয়। কাস্টমারের সঙ্গে এটাও একধরনের প্রতারণা।
কনফার্ম করে শেষ মুহূর্তে মাফ চেয়েই দায় সারলো দারাজ। কিন্তু আমার মেয়েকে কী জবাব দেবো? ভিআর নিয়ে মেয়ে কল্পনায় যে স্বপ্ন দেখেছে তার কী হবে? একটি অর্ডারের সঙ্গে কত আবেগ, স্বপ্ন, ভালোবাসা আর আকাঙ্ক্ষা অনুক্ত থাকে তার হিসাব কি রাখে দারাজ!!
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৭
এমআই/এএ