চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম সাধারণত চট্টগ্রাম, ফেনী ও ঢাকায় পাঠানো হয়ে থাকে। কিন্তু এসব এলাকায় বন্যা ও বৃষ্টির কারণে আমের দাম নেমে গেছে।
শিবগঞ্জ পৌর এলাকার আম বাজারের আড়তদার শাহিন আলী বলেন, সাতদিন আগেও দিনে গড়ে দুই/তিন ট্রাক আম বিভিন্ন মোকামে পাঠিয়েছি। কিন্তু বর্তমানে ব্যাপারিরা আম কিনতে ও পাঠাতে নিষেধ করায় আম পাঠানো এবং কেনা বন্ধ রেখেছি।
কানসাট আম বাজারের আড়তদার তাজউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ছয়/সাতদিন আগে চট্টগ্রাম ও কিশোরগঞ্জে আম পাঠিয়েছিলাম কিন্তু ট্রাক পৌঁছালেও বৃষ্টির কারণে ত্রিপল খুলে আম নামাতে পারেনি। ফলে বিভিন্ন মোকামে পাঠানো আম দুইদিন পর ট্রাক থেকে আনলোড করলে দেখা যায় বেশ কিছু আম পেকে ও পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে ব্যাপারিরা আম কেনা বন্ধ করে দিয়েছে।
চককীত্তি এলাকার আড়ৎদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এক সপ্তাহ আগে যে পরিমাণ আম কিনে মোকামে পাঠিয়েছি এখন তা নেমে অর্ধেকে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টির কারণে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দোকান করতে না পারায় ব্যাপারিরা আম কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে আমের দাম নেই বললেই চলে। সদর, ভোলাহাট, রহনপুরের আমের বাজারেরও একই অবস্থা।
আম বাগান মালিক ইসমাইল হোসেন শামীম খাঁন বলেন, এ বছর আম রপ্তানিতে নতুন নিয়মের কারণে এমনিতেই বিদেশে আম রপ্তানি করতে পারিনি। তার ওপরে বন্যার কারণে আমের অভ্যন্তরীণ চাহিদাও নেই। তার দাবি ৯৫ ভাগ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীই ব্যবসা করেন ফুটপাথে। মূলত তারা মোকামগুলো থেকে আম কেনেন। কিন্তু বৃষ্টিতে বসতে না পারায় আমের বিক্রি কমে গেছে।
জেলার বিভিন্ন আম বাজারে গিয়ে দেখা যায়, এক সপ্তাহ আগে ফজলি আম ছিল ১৬০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা মণ। এর আগের সপ্তাহে তা ছিল ২৪০০ টাকা থেকে ২৮০০ টাকা মণ। কিন্তু বর্তমানে আবার তা কমে আগের দামে বিক্রি হচ্ছে।
কানসাটের কয়েকজন আম আড়তদার জানান, বৃষ্টির কারণে কানসাট বাজারে আমের দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। এ অবস্থায় আম চাষিরা গাছ থেকে আম ভাঙতে পারছেন না।
তারা আরো জানান, বাজারে বর্তমানে ল্যাংড়া, ফজলি, লক্ষ্মনা ও আম্রপালি আম পাওয়া যাচ্ছে। এসব আমের দাম বর্তমানে ১৩০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা মণ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বন্যা ও বৃষ্টি না হলে এসব আমের দাম হতো ২৫০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা মণ। এক সপ্তাহের মধ্যে আমের দাম বাড়া কমার কারণে আম চাষিদের মুখে হাসি দেখা শুরু হতে না হতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, ০৭ জুলাই, ২০১৭
আরএ