তবে এরই মধ্যে ভিযেতনামসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা চাল দেশে আসা শুরু হয়েছে। এতে দ্রুতই চালের বাজারদর কমে আসবে।
সোমবার (১৭ জুলাই) জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়সহ বিভিন্ন সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ জেলায় ২২টি লোকাল সাপ্লাই ডিপো (এলএসডি) ও একটি সেন্টার স্টোরেজ ডিপো (সিএসডি) রয়েছে। এছাড়াও সান্তাহারের সাইলো ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে আছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি বিশেষায়িত বহুতল খাদ্যগুদাম (মাল্টি স্টোরিড ওয়্যারহাউজ)। এরই মধ্যে শুধু বিশেষায়িত এ খাদ্যগুদামের ধারণ ক্ষমতা ২৫ হাজার মেট্রিক টন। সূত্রটি জানায়, রোববার (১৬ জুলাই) পর্যন্ত জেলার এসব লোকাল সাপ্লাই ডিপো (এলএসডি) ও একটি সেন্টার স্টোরেজ ডিপো (সিএসডি) সব মিলিয়ে প্রায় ১৪ হাজার ৫৫৯ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে চাল ১৩ হাজার ৯৬০ মেট্রিক টন ও গম ৫৯৯ মেট্রিক টন্।
এর বাইরে বিশেষায়িত খাদ্যগুদামে (মাল্টি স্টোরিড ওয়্যারহাউজ) খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে মাত্র ২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টনের মত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাদ্য বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, গেল বছরের এ সময়ে এসব এলএসডি ও সিএসডি ডিপোতে সার্বক্ষণিক ৫০ হাজার মেট্রিকটন খাদ্যশস্য মজুদ থাকতো। বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রত্যহ খাদ্যশস্য সরবরাহ করা হতো।
প্রয়োজনে অন্য জেলা বা উপজেলায় খাদ্যশস্য বিধি মোতাবেক সরবরাহ করে নতুন খাদ্যশস্য ভরাতে জায়গা ফাঁকা করতে হতো। এরপরও ব্যবসায়ীদের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হতো।
অথচ এবারের চিত্র একেবারে উল্টো। ডিপোগুলো ফাঁকা হয়ে পড়ে রয়েছে। লোকসানের ঠুনকো অজুহাত তুলে জেলার বেশির ভাগ লাইসেন্সধারী মিলার বোরো মৌসুমের চাল দিতে সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হননি। দফায় দফায় মিটিং করেও সরকারকে চাল দিতে এসব মিলারকে চুক্তিবদ্ধ করাতে ব্যর্থ হন খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
শেষমেষ জেলার মোট ১হাজার ৯শ’ ৩৫ জন মিলারের মধ্যে মাত্র ৭শ’ ১৮ জন মিলার সরকারকে চাল দিতে চুক্তিবদ্ধ হন। এর মধ্যে সেদ্ধ চালের মিলার ৭শ’ ৭জন ও আতপ চালের মিলার ১১জন।
চুক্তি অনুযায়ী এসব মিলার সরকারকে মোট প্রায় ২২ হাজার মেট্রিক টন চাল দেবেন। রোববার (১৬ জুলাই) পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ হয়েছে। ১ আগস্ট পর্যন্ত চাল সংগ্রহ অব্যাহত থাকবে।
এদিকে সরকারিভাবে এ জেলায় মোট ৬৮ হাজার ৮শ’ ৮ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে সেদ্ধ চালের পরিমাণ ৬২ হাজার ৪শ’ ২৯ মেট্রিকটন ও আতপ চাল ৬ হাজার ৩শ’ ৭৯ মেট্রিক টন।
তবে সরকারকে চাল দিতে চুক্তিবদ্ধ না হওয়ায় ১ হাজার ২শ’ ১৭ জন লাইসেন্সধারী মিলারকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। একটানা আগামী চারটি মৌসুম এসব মিলার সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা পাবেন না। তাদের কাছ থেকে সরকার কিছুই কিনবে না।
সোমবার বিকেলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মাইন উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, ব্যবসায়ীরা চাল না দেওয়ায় কিছুটা সঙ্কট হয়েছে একথা অস্বীকার করার উপায় নেই। একারণে বিগত বছরের চেয়ে খাদ্যশস্যের মজুদ এখন কম।
খাদ্য বিভাগের এই কর্মকর্তা বলেন,আমদানিকৃত চাল এরই মধ্যে দেশে আসতে শুরু করেছে। আগামী দু’মাসের মধ্যে দেশে চালের বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে। চাল নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। খাদ্যশস্যের মজুদ পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
বাংলাদেশ সময়:১৯০৫,ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
এমবিএইচ/জেএম