ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

গৃহঋণে খেলাপি তিন শতাংশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৭
গৃহঋণে খেলাপি তিন শতাংশ “হোমলোন অব ব্যাংকসঃ ট্রেন্ড অ্যান্ড ইমপ্যাক্ট” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে

ঢাকা: সাধারণ ঋণের চেয়ে গৃহঋণে খেলাপি তুলনামূলকভাবে অনেক কম। ২০১৬ সালে খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। কিন্তু গৃহঋণে তা মাত্র ৩ শতাংশ। ২০০৬ সালে ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণের  হার ছিল ৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ। তখন গৃহঋণে খেলাপি ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে “হোমলোন অব ব্যাংকসঃ ট্রেন্ড অ্যান্ড ইমপ্যাক্ট” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জনানো হয়।
বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক (ডিএসবিএম) মহীউদ্দিন সিদ্দিকী।

এতে আরও বলা হয়েছে, গৃহঋণের অধিকাংশই শহরে বসবাসকারী। মোট ঋণের ৮৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ পায় শহরের মানুষ। সেখানে গ্রামের মানুষ ঋণ পেয়েছে সাড়ে ১৬ শতাংশ। আবার ঋণের অধিকাংশ অর্থই বাড়ি নির্মাণে ব্যয় হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে শূর চৌধুরী বলেন, মানুষ গৃহ নির্মাণে যাতে সহজে ঋণ পায় সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। সহজ শর্তে ও স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে মধ্যবিত্তের মাথাগোজার ঠাই হয়। তিনি বলেন, গৃহঋণের নানাদিক বিশ্লেষণ করে নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, এ নীতিমালা প্রণয়ণ সম্পন্ন হলে গ্রাহকরা সহজে ঋণ পাবে।
বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী বলেন, মানুষের মাথাগোঁজার ঠাঁই হচ্ছে ঘর। সুতরাং এ খাতে ঋণের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। তবে এ ঋণ হতে হবে স্বল্পসুদের। এ ঋণ যাতে গ্রামের মানুষ পায় তারও ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি বলেন, গৃহঋণের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা আছে। এগুলোর সমাধান প্রয়োজন।
পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ফ্ল্যাট বা বাড়ি রেজিস্ট্রেশন করার সময় ব্যাংকের কাছে মর্টগেজ আছে কিনা তা শতভাগ নিশ্চিত হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংক থেকে গৃহঋণ নিলে তা বাড়ির সামনে সাইনবোর্ডে উল্লেখ করতে হবে। অনেক ব্যবসায়ী এবং বাড়ির মালিক ব্যাংকঋণ নিলেও তা সেই নিয়ম মেনে সাইনবোর্ডে উল্লেখ করে না। এছাড়া গৃহঋণে প্রভিশন ২ শতাংশের জায়গায় ১ শতাংশ হলে ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে আরও উৎসাহবোধ করবে ।
স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের কান্ট্রি হেড আবরার আনোয়ার বলেন, গৃহঋণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে উচ্চ সুদ বড় বাঁধা। আগামীতে গৃহঋণে সুদহার আরও কমিয়ে আনতে হবে। একইসঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিদের গৃহঋণের আরও সুযোগ দিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী বলেন, কিছু অসাধু আবাসন ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকে আবার ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট তৈরি করে বিক্রি করেছেন কিন্তু তার রেজিস্ট্রেশন দেয়নি। এর কারণ হচ্ছে, তারা লোন পরিশোধ করছেন না তাই ফ্লাটের রেজিস্ট্রেশন দিতে পারছেন না। গ্রাহকরা ফ্ল্যাট কিনেও রেজিস্ট্রেশন পাচ্ছেন না। এখানে সরকারের নজরদারি বাড়াতে হবে।
বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের কান্ট্রি হেড আবরার আনোয়ার এবং সীমান্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুখলেসুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের পরিচালক (গ.উ.ক) ড.প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী।
বাংলাদেশ সময়: ০২০০ঘণ্টা, জুলাই: ২১, ২০১৭
জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।