শনিবার (২২ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত বেনাপোল স্থলবন্দর প্রশাসনিক ভবনের অডিটোরিয়ামে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
যশোর জেলা প্রশাসক মো. আশরাফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন- বন্দর, কাস্টমস, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা, প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা।
আলোচনা সভায় বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, সপ্তাহে ৭ দিনে ২৪ ঘণ্টা বন্দরের কার্যক্রম খোলা রাখতে হলে প্রথমে এখানে অবশ্যই পণ্যাগার তৈরির জন্য জায়গা অধিগ্রহণ করতে হবে। কারণ ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকলে বেশি পণ্য আমদানি হবে তা রাখার পর্যাপ্ত জায়গা এই বন্দরে নেই। বর্তমানে বন্দরের ধারণক্ষমতা ২৫ হাজার মে. টন। কিন্তু এখানে সব সময় পণ্য থাকছে প্রায় এক লাখ মে. টন। এতে দিনের অধিকাংশ সময় জায়গার অভাবে আমদানি পণ্যের জটে সড়কে যানজট লেগে থাকছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) সনিয়া বলেন, ২৪ ঘণ্টা যাত্রী সেবার জন্য তারা প্রস্তুত রয়েছেন। কিন্তু কিছু সমস্যাও রয়েছে। যাত্রীরা অনেক সময় যাত্রার পথে এখানে এসে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। তাই ইমিগ্রেশনে চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা রাখা দরকার। এছাড়া যাত্রীদের কাছ থেকে ফাইনের যে অর্থ পাওয়া যায় সেটা জমা রাখার কোনো ব্যবস্থা তাদের নেই। ব্যক্তিগতভাবে এসব টাকা নিজেদের কাছে রাখতে হয়। ইমিগ্রেশনের জন্য ব্যাংক একাউন্ট ও যাত্রীদের জন্য ব্যাংকের বুথ থাকলে ভালো হয়।
বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) খন্দকার শামিম উদ্দিন বলেন, আমদানি পণ্য ও যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে রাস্তায় পুলিশের টহল বাড়াতে হবে। এজন্য তাদের আরও একটি পুলিশ পিকআপ ভ্যান প্রয়োজন। বন্দরে বাস টার্মিনাল থাকা সত্বেও পরিবহনের চালকরা সেখানে বাস না রেখে রাস্তায় রেখে যানজট সৃষ্টি করছে। এসব অনিয়ম বন্ধ করতে হবে। আবার অনেক সময় চালকরা রাস্তায় গাড়ি রেখে চলে যায়।
বেনাপোল কাস্টমসের সহকারী কমিশনার রাফিয়া বলেন, কাস্টমস অটোমেশনের আওতায় রয়েছে। বন্দর যদি দ্রুত অটোমেশন চালু করে তবে সুবিধা হবে। বেনাপোল কাস্টমস হাউসে জনবল সংকট নিরসনে লোক নিয়োগ হচ্ছে। সুতরাং ২৪ ঘণ্টা কার্যক্রম চালু রাখতে তাদের খুব একটা অসুবিধা হবে না।
বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুর রউফ বলেন, বন্দরের কিছু কিছু আধুনিকায়ন ও জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। অটোমেশন, জনবল বৃদ্ধি ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়েও উপরে মহলে জানানো হয়েছে। দ্রুত এসব সমস্যা নিরসন হবে। তারা ২৪ ঘন্টা সেবার জন্য প্রস্তুত আছে।
জেলা প্রশাসক মো. আশরাফ উদ্দিন সবার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের পরামর্শ আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাবো। তিনি প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবেন।
এছাড়া সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা সেবা চালুর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন- উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুস ছালাম, বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) রেজাউল ইসলাম, বাংলাদেশ স্থলবন্দর ইমপ্লোয়েজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন মজুমদার, বেনাপোল ট্রাক ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দিন গাজি, আমদানি-রফতানি সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসক্লাব বেনাপোলের সভাপতি মহাসিন মিলন, বন্দর প্রেসক্লাব বেনাপোলের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক ও সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৭
জিপি/এসআইএস