রোববার (৩০ জুলাই) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও অনুমোদন’ সংক্রান্ত সভায় এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। যা গত বছরের চেয়ে ৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেশি।
সভায় জানানো হয়, গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সার্ভিস সেক্টরসহ রফতানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ১২ কোটি ৫০ ডলার। এর বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধির হার হচ্ছে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরে পণ্য রফতানি করে ৩ হাজার ৭৫০ কোটি (৩৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন) ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে সরকার, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ২১ শতাংশ বেশি। সেবাখাতে ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ৩৫০ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। দুই খাত মিলে চলতি অর্থবছরের জন্য মোট ৪ হাজার ১০০ কোটি (৪১ বিলিয়ন) ডলার রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এবার প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক শিল্প খাত থেকে ৩ হাজার ১৬ কোটি ডলার আসবে বলে ধরা হয়েছে, যা মোট রফতানি লক্ষ্যমাত্রার ৮০ শতাংশ। তিনি বলেন, আশা করি এই টার্গেটে আমরা পৌঁছাতে পারবো।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তৈরি পোশাক খাতে আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি এবার হয়নি। তার মূল কারণ হলো আগের তুলনায় বর্তমানে ইউরোর মূল্য দাম কমে গেছে। বেক্সিটের পর পাউন্ডেরও মূল্যামন কমেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বচানের কারণে এবার সেখানে আমাদের আশানুরূপ রফতানি হয়নি। আরেকটা অন্যতম কারণ হচ্ছে আমাদের দেশের পণ্য রফতানিকারকরা নায্যমূল্য পাচ্ছে না।
রানা প্লাজা ধসের কারণে যে একটা নেগেটিভ ইমেজ তৈরি হয়েছিল সে থেকে আমরা এখনো পুরোপুর মুক্তি পাইনি। তাই এবার পোশাক রফতানি কমেছে। তবে এখন কারখানাগুলো আধুনিকায়ন করা হয়েছে। তাই আশা করি এসব থেকে আমরা এখন ঘুরে দাঁড়াবো।
তোফায়েল বলেন, আমরা আশাবাদী ২০২১ সালের মধ্যে মোট ৬০ বিলিয়ন (৬ হাজার কোটি) ডলার রফতানি আয়ের লক্ষ্য পূরণ হবে। পোশাক রফতানিতে ৫০ বিলিয়ন ডলার অর্জিত হবে।
সভায় বাণিজ্য সচিব শভাষীস বসু, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ছাড়াও অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং অধীনস্থ দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আগের অর্থবছরে (২০১৬-১৭) ৩ হাজার ৪২৫ কোটি ৭২ লাখ ডলার থেকে ৮ শতাংশ বাড়িয়ে গত অর্থবছরে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ হাজার ৭শ' কোটি ডলার। শেষ পর্যন্ত এই লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৬ শতাংশ কমে রফতানি হয়েছে তিন হাজার ৪৮৪ কোটি ডলারের পণ্য। এ নিয়ে টানা ৬ বছর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। আগের বছরের তুলনায় রফতানি মাত্র ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেশি হয়েছে।
এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতে ওভেন ক্যাটাগরির আয় গত অর্থবছরের তুলনায় ২ দশমিক ২৫ শতাংশ কমেছে। নিটের আয় কিছুটা বেশি অর্থাৎ ৩ শতাংশ বাড়ার সুবাদে গড়ে তৈরি পোশাক রফতানি গত বছরের তুলনায় কমে যাওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে। গড়ে আয় বেড়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ, যা গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৭
আরএম/এসএইচ